“বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।”
-কাজী নজরুল ইসলাম
বিশ্বায়নের এই যুগ হলো এগিয়ে যাওয়ার। নারী কিংবা পুরুষ - এগিয়ে যাওয়ার অধিকার রয়েছে সবারই। বর্তমান সময় শেকলে বন্দি হয়ে থাকার নয়। এগিয়ে যাওয়ার মিছিলে যোগ দিয়ে, যে কেও উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে। এই জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও সৎ সাহস।
অনলাইনে ব্যবসা করা বর্তমান সময়ের একটি জনপ্রিয় ব্যবসার মাধ্যম। ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে মানুষ খুব সহজেই ঘরে বসেই বিভিন্ন রকমের কাজ করতে পারছেন। এই অনলাইন এর উপরে নির্ভর করে নারী উদ্যোক্তারাও ঘরে বসে বিভিন্ন রকমের অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এটি যেমন তাদের স্বনির্ভর করে গড়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে, তেমনিভাবে এটি হয়ে উঠতে পারে একটি নির্ভরযোগ্য আয়ের উৎস।
এই নিবন্ধে আমরা এমন কিছু অনলাইন ব্যবসা নিয়ে কথা বলবো যা বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য উপযোগী। তারা চাইলেই সংসারে বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে এই সকল ব্যবসা শুরু করতে পারেন।
1. বেকিং ও পেস্ট্রি শপ (Baking and Pastry Shop )
আপনি যদি বেকিং পছন্দ করে থাকেন - তবে বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে একেই বেছে নিতে পারেন। একটি ব্যবসা তখনই সফল হয়ে উঠে যখন একজন মানুষ এর প্রতি ভেতর থেকে আগ্রহ অনুভব করে। এই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে অনেক নারী উদ্যোক্তারাই বেকিংকে বেছে নিচ্ছেন। নিত্যনতুন ডিজাইন, অভিনব উপস্থাপন মানুষদের এই সকল পেস্ট্রি শপের প্রতি আগ্রহী করে তুলছে।
যেভাবে শুরু করতে পারেন:
- শুরুটা হতে পারে একটি সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ কিংবা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
- বিভিন্ন পেস্ট্রি, কেক কিংবা হোম মেইড কুকিজ এর আকর্ষণীয় ডিজাইন ও ক্যাটালগ তৈরি করুন যেন মানুষ আগ্রহ বোধ করে।
- মানুষের জিজ্ঞাসার যথাযথ উত্তর দিন এবং প্রচার চালিয়ে যান।
- নিয়মিত প্রচার, কন্টেন্ট আপলোড করা হলে ধীরে ধীরে আপনার প্রতিষ্ঠান দাঁড়িয়ে যাওয়া শুরু করবে।
কেনো শুরু করবেন:
বাংলাদেশের মানুষ ভোজনরসিক। আমরা খেতে এবং খাওয়াতে পছন্দ করি। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে কেক এর প্রয়োজন হয়। অনেকক্ষেত্রেই কেকের গুণগত মান ভালো না হওয়ার কারণে, আমাদের আগ্রহে পানি পড়ে যায় । একটি ভালো মানের পেস্ট্রি শপ এই চাহিদা মেটাতে পারে, একই সাথে বেকিং ইন্ডাস্ট্রিকেও প্রয়োজনীয় গতিশীলতা প্রদান করতে পারে।
আরো পড়ুন: কিভাবে সেলস বৃদ্ধি করা যায়? বিক্রয় বাড়ানোর কৌশল এবং উপায় সমূহ
2. সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Social Media Manager & virtual Assistant)
ডিজিটাল যুগের সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক ব্যবহারের কারণে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন প্রায় প্রতিটি ব্যবসারই অনলাইন পেইজ খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এই সকল পেইজের বেশির ভাগেরই ব্যবস্থাপনা ভালো না হওয়ার কারণে প্রয়োজনীয় সাফল্য আসে না। এই কারণে, প্রয়োজনীয় সাফল্য পেতে অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার নিয়োগ করছেন।
কেনো এটি নারীদের জন্য উপযোগী:
যারা বাইরে কাজে যান না এবং বাসাতেই একটা বড় সময় ইন্টারনেটে কাটিয়ে দিতে পছন্দ করেন এই কাজটি যেন তাদের জন্যই নকশা করা। ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর পাশাপাশি একজন চাইলে দুই থেকে তিনটি পেইজ রক্ষণাবেক্ষণ, পোস্ট করা এবং মেসেজ এর উত্তর দেওয়ার কাজ করে যেতে পারেন। পার্ট টাইম কাজের এই ক্ষেত্রটি সেক্ষেত্রে হয়ে উঠবে বাড়তি আয়ের কিংবা হাত খরচের একটি উৎস।
এই কাজটি যেভাবে শুরু করবেন:
আপনার প্রয়োজন হবে শুধু তিনটি জিনিস।
- একটি এন্ড্রোয়েড মোবাইল ফোন,
- ইন্টারনেট সংযোগ এবং
- কিছু সময়।
আর শুরু করার জন্য আপনি আপনার পরিচিতদের সাথে কথা বলতে পারেন। এমন অনেকেই আছে যারা পেইজ বানিয়ে রেখেছেন ঠিকই কিন্তু তার ব্যবহার করে না। আবার অনেকের ব্যবসা বড় কিন্তু কোনো সোশ্যাল মিডিয়া পেজ নেই।
আপনি এই সকল মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন এবং শুরু তাদের কিছুটা সময় বিনামূল্যে সার্ভিস দিতে পারেন। এটি যেমন আপনার Resume কে ভারি করবে তেমনি অভিজ্ঞতাও প্রদান করবে। এই নির্দিষ্ট সময়ের পর আপনি চাইলে পেইজের মালিকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট টাকা দাবি করতে পারেন, অথবা যারা সার্কুলার দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার খুঁজছেন তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
3. হ্যান্ডিক্রাফট (Handicrafts)
হাতে তৈরি জিনিসের চাহিদা সব সময়ই ছিল, সব সময়েই থাকবে। মেয়েদের মাঝে অনেকেই শখের বসে বিভিন্ন হ্যান্ডিক্রাফট সামগ্রী তৈরি করে থাকেন। অনেকের ক্ষেত্রে এটি নিজেদের লিভিং রুমের গণ্ডির মাঝেই থেকে যায়। আপনি কি একবার ভেবে দেখেছেন, যে জিনিসটা দিয়ে আপনি আপনার বাসা সাজিয়েছেন তা অন্য আরেকজনের ঘরেও শোভার বাড়াতে পারে?
যেভাবে নিজেকে আলাদা করে তুলে ধরবেন
এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই যে হ্যান্ডিক্রাফট এর বাজার অনেক প্রতিযোগিতায় ভরপুর। এই কারণে অন্যদের তুলনায় নিজেকে আলাদা করতে আপনার বেশ কিছু বিষয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন হবে
- আকর্ষণীয় ও অভিনব ডিজাইন
- প্রতিযোগিতামূলক দাম
- ডিজিটাল মিডিয়ার যথাযথ ব্যবহার
- আকর্ষণীয় প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি
যে ধরণের পণ্য বিক্রয় করতে পারেন
হ্যান্ডিক্রাফট এ পণ্যের শেষ নেই। যে-সকল পণ্য দিয়ে আপনি শুরু করতে পারেন:
- বাঁশ ও বেতের সামগ্রী
- সুগন্ধি মোম
- হ্যান্ড মেইড সাবান
- ক্যালিগ্রাফি
- হ্যান্ড মেইড কার্ড
- মৃৎ শিল্প
- রেসিন দিয়ে তৈরিকৃত পণ্য
- কাঠের পণ্য ইত্যাদি
আরো পড়ুন: Sales Promotion কি? সেলস প্রমোশনের প্রকার এবংকৌশল সমূহ
4. ব্লগিং ও কনটেন্ট রাইটিং (Blogging & Content Writing)
আপনার যদি লেখালেখি নিয়ে আগ্রহ থেকে থাকে তবে ব্লগিং আপনার জন্য উপযোগী একটি পেশা হতে পারে। একই সাথে আপনারা কন্টেন্ট রাইটিং, ফ্রিল্যান্স রাইটিং, ক্রিয়েটিভ রাইটিং ইত্যাদিতেও মনোনিবেশ করতে পারেন। এটি এমন একটি কাজ যা নারী পুরুষ নির্বিশেষেই করতে পারে।
কীভাবে শুরু করবেন
- Wordpress, medium, blogspot এর মতো এমন অনেকে সাইট রয়েছে যেখানে আপনি বিনামূল্যে ব্লগ লিখতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় শর্তাবলি পূরণ করে আয়ও করতে পারেন।
- বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কন্টেন্ট রাইটার নিয়ে থাকে। এই সকল প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্স রাইটার হিসেবে রিমোট ওয়ার্কার হিসেবে যোগ দিতে পারেন।
যা মাথায় রাখতে হবে:
- একটি নির্দিষ্ট টপিক বেছে নিলে আপনি একটি নির্দিষ্ট শ্রেণির পাঠকদের কাছে সহজেই পৌঁছে যেতে পারবেন।
- লেখার মান ও বিষয়বস্তু ভালো হতে হবে
- SEO কন্টেন্ট লেখার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। ইউটিউবে একটি দুইটি ভিডিও দেখে নিলেই ব্যাপারগুলো বুঝতে পারবেন।
- বাংলাদেশে রয়েছে এমন একটি পেমেন্ট সিস্টেম বেছে নিতে হবে।
5. ফ্রিল্যান্সার (Freelancing)
কন্টেন্ট রাইটিং নিয়ে যখন বললাম তখন ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে বলেই যাই। শুধু লেখালেখিই কিন্তু ফ্রিল্যান্স টাকা আয়ের একমাত্র উৎস না। বিভিন্ন রকমের ফ্রিল্যান্সিং রয়েছে। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো আপনি এর মাধ্যমে সারা বিশ্ব থেকে কাজ নিতে পারবেন এবং ভালো পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।
কি কি জিনিস প্রয়োজন:
- একটি ভালো পার্সোনাল কম্পিউটার ও ইন্টারনেট সংযোগ
- যে বিষয়ে কাজ করতে চান তার সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান
- Fiverr, people for hour, upwork এর মতো বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে নিজেকে যথাযথ উপায়ে উপস্থাপনের ক্ষমতা
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ধৈর্য
কি ধরনের কাজ করা যায়
বিভিন্ন রকমের ফ্রিল্যান্সিং এর মাঝে রয়েছে
- ভিডিও এডিটিং
- ওয়েব ডিজাইনিং
- সাউন্ড এডিটিং
- ইমেজ এডিটিং
- অনলাইন টিউটোরিং
- গ্রাফিক্স ডিজাইনিং
- মার্কেটিং
- লোগো মেকিং ইত্যাদি
আরো পড়ুন: B2B এবং B2C ব্যবসা কাকে বলে? এদের মধ্যে পার্থক্য, সুবিধা অসুবিধা
6. অনলাইনে পোশাক বিক্রি (Online Clothing Shop)
অত্যন্ত জনপ্রিয় হওয়ার পরেও অনলাইনে পোশাক বিক্রিকে এত নিচে দেওয়ার একটি কারণ রয়েছে। আর তা হলো প্রয়োজনের চেয়ে অধিক পরিমাণে অনলাইন পোশাকের দোকানের সংখ্যা। তবে এর মানে এই না যে, এই অনলাইন ব্যবসার গুরুত্ব বিন্দুমাত্র কমে গিয়েছে। নতুনত্ব কোনো বুদ্ধি যদি আপনার থেকে থাকে তবে আপনি নিজেও এই ব্যবসা থেকে সফল হতে পারেন।
আপনাকে কিছু ব্যাপার খেয়াল রাখতে হবে
- আপনার প্রোডাক্ট ফটোগ্রাফি কিংবা প্রোডাক্ট ভিডিও হতে হবে আকর্ষণীয়
- ডিজাইনে ভিন্নতা আবশ্যক
- প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার মতো দাম দিতে হবে
- ট্রেন্ড সম্পর্কে কার্যকর জ্ঞান থাকতে হবে
আরো পড়ুন: বাংলাদেশে ই-কমার্স - বিভিন্ন ধরণ, সফলতা, ভবিষ্যৎ এবং চ্যালেঞ্জ
7. রিসেলিং (Reselling)
রিসেলিং হলো কোনো একটি পণ্য পুনরায় বিক্রি করার কৌশলকে বলা হয়। এটি এক ধরনের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের বিক্রি বাড়ানোর জন্য রিসেলার নিয়োগ করেন। এই সকল ক্ষেত্রে একজন এই সকল কোম্পানির পণ্য সমূহ প্রচার করেন। এবং প্রতিটি বিক্রয়ের জন্য কমিশন লাভ করেন।
কেন নারীরা এটি করতে পারেন:
- রিসেলিং বিভিন্ন রকমের পণ্যের হতে পারে। এর মাঝে একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে নারীদের ব্যবহার্য পণ্য। একজন নারীর বিক্রিত পণ্য অনেক ক্ষেত্রেই আরেকজন নারীর আগ্রহ তৈরি করতে পারে।
- এই ক্ষেত্রে কোনো মুলধন কিংবা পুঁজি প্রয়োজন নেই
- একটি মোবাইল ফোনে ছবি তুলে কিংবা ভিডিও করে পণ্য বিক্রয় সম্ভব।
- পণ্য প্যাকেজিং ও প্রেরণ সংক্রান্ত জটিলতা নেই, কারণ কোম্পানি সমূহই এই ব্যাপারগুলো দেখে থাকেন।
8. ডিজিটাল আর্ট বিক্রি (Digital Art Selling)
আপনার যদি ডিজিটাল আর্টে প্রতিভা থেকে থাকে তবে আপনার সৃষ্টিগুলো অনলাইনে বিক্রি করার কথা বিবেচনা করতে পারেন। ডিজিটাল আর্টওয়ার্ক, ইলাস্ট্রেশন, গ্রাফিক ডিজাইন বা কাস্টম পোর্ট্রেট তৈরি এবং বিক্রি করা অনেক লাভজনক।
যেভাবে শুরু করতে পারেন:
- সোশ্যাল মিডিয়া পেইজ বা নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে
- Etsy কিংবা Amazon এর মতো ওয়েবসাইটগুলোতে অ্যাকাউন্ট খোলার মাধ্যমে
- বইয়ের প্রচ্ছদকার হিসেবে কাজ করে
- স্থানীয় মার্কেটে আপনার আঁকা ছবি ফ্রেমবন্দি করেও বিক্রি করতে পারেন
কেনো ডিজিটাল আর্টকে আয়ের উৎস হিসেবে নিতে পারেন:
- একটি ছবি আপনি চাইলে অসংখ্যবার, সারা বিশ্বে বিক্রি করে যেতে পারবেন
- এর জন্য আপনার আলাদা করে তেমন পুঁজি দরকার নেই। ভালো পিসি কিংবা গ্রাফিক ট্যাব থাকলে আপনি যে কোন সময়ই শুরু করতে পারবেন।
আরো পড়ুন: বিনা পুঁজিতে শুরু করতে পারবেন এমন ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া
9. হোম মেইড ফুড ও ক্যাটারিং সার্ভিস (Homemade Food Business)
ভালো খাবার কে না খেতে চায়। ভালো খাবারের প্রতি আমাদের সকলেরই দুর্বলতা রয়েছে। আমাদের দেশের বেশির ভাগ নারীরই রান্নার হাত অনন্য। এখন যদি এই রান্নার হাতকে রসনা শিল্পে রূপান্তরিত করে ফেলা সম্ভব হয় তবে কেমন হবে?
এই ব্যবসাও আপনারা আলাদা আলাদা উপায়ে শুরু করতে পারেন:
- অন ডিমান্ড ফুড সার্ভিস
- ফ্রোজেন ফুড সার্ভিস
- বিভিন্ন অফিসকে লক্ষ্য করে ক্যাটারিং সার্ভিস
কেনো এটি বেছে নিতে পারেন
- এমন অনেক সময়েই হয় আমাদের কোনো একটি খাবার খেতে ইচ্ছা করছে। কিন্তু সেই মুহূর্তে তৈরি করা সম্ভব না। এই সকল ক্ষেত্রে হোম মেইড খাবারের দোকান ভালো বিকল্প হতে পারে
- ফ্রোজেন খাবারের প্রতি অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছে কারণ এটি নিজের সুবিধা মতো সময়ে তৈরি করে খাওয়া সম্ভব।
- বিভিন্ন অফিসে সকাল, দুপুর কিংবা বিকালের নাস্তা সরবরাহ করার কাজ করা যেতে পারে। অফিসের কর্মচারীগণ কম খরচে ভালো মানের খাবার প্রত্যাশা করে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি ব্যবসার মডেল তৈরি করা সম্ভব।
10. বিউটি প্রোডাক্ট ও পার্সোনাল কেয়ার (Beauty Product & Personal Care Business)
সারাবিশ্বেই বর্তমানে বিউটি প্রোডাক্ট ও পার্সোনাল কেয়ারের জয় জয়কার। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম যেমন টিকটক এ বিভিন্ন পার্সোনাল কেয়ার প্রোডাক্ট এর ভিডিও এর প্রসার ঘটার কারণে এই সেক্টরটির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী।
কেনো নারীরাই এই ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য:
- বিউটি ইন্ডাস্ট্রির সিংহভাগই নারীদের উদ্দেশ্য করে পরিচালিত হয়। একজন নারী স্কিন প্রোডাক্ট এর ব্যাপারে একজন নারীকেই যতটা ভরসা করবে ততটা একজন পুরুষকে করবে না।
- একজন নারী একটি প্রসাধনী কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা চাইলেই দেখাতে পারবেন, যা পুরুষদের ক্ষেত্রে এতটা সহজ হবে না।
- অনলাইনে প্রসাধনী ব্যবসা অসংখ্য সুবিধা প্রদান করে
- বাংলাদেশে সৌন্দর্য এবং পরিচর্যা শিল্পের একটি বিশাল গ্রাহক গোষ্ঠী রয়েছে, যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি সম্ভাব্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য একটি সুবিধাজনক এবং সাশ্রয়ী উপায় প্রদান করে।
- অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলি ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট এবং আপনার ব্যবসার স্কেলিংয়ের ক্ষেত্রে দুর্দান্ত নমনীয়তা প্রদান করে, অনেকে কিছুই অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন সম্ভব হয়।
অনলাইন ব্যবসার ক্ষেত্রে যে-সব জিনিস মাথায় রাখতে হবে
অনলাইন ব্যবসা এর ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকারি। এই ব্যাপারগুলো চিন্তা প্রসূত উপায়ে সমাধান না করলে ব্যবসা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
ব্যবসার ধরণ ঠিক করুন
প্রথমেই, আপনি কি ব্যবসা করতে চান শনাক্ত করতে এবং বুঝতে হবে। বিভিন্ন বাজার নিয়ে গবেষণা করুন এবং এমন কিছু ব্যবসার বুদ্ধি বের করুন যেখানে প্রতিযোগিতা কম।
ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বিকাশ করুন
একটি সুগঠিত পরিকল্পনা আপনাকে আপনার ব্যবসার লক্ষ্য এবং টার্গেট কাস্টমারদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারে। আপনার বিপণন কৌশল সাবধানে পরিকল্পনা করুন। এটি আপনাকে আপনার ব্যবসাকে সহজে পরিচালনা করতে সাহায্য করবে।
একটি প্রফেশনাল বিজনেস ওয়েবসাইট তৈরি করুন
একটি ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট থাকা অপরিহার্য কারণ ওয়েবসাইটটি একটি ডিজিটাল স্টোরফ্রন্ট হিসেবে কাজ করে। ব্যবহারকারী-বান্ধব এবং দৃশ্যত আবেদনময়ী একটি ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট ব্যবসাকে বিকশিত করতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করুন
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলি ব্যাপক দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর শক্তিশালী হাতিয়ার। নিয়মিত বিষয়বস্তু পোস্ট করা, মেসেজের জবাব দেওয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়া বিজ্ঞাপনের সুবিধা নেওয়া আপনার ব্যবসায় আরোও ট্র্যাফিক আনতে সাহায্য করতে পারে।
সর্বশেষ ভাবনা
বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রচুর সুযোগ প্রদান করে। কার্যকর বিপণন কৌশলগুলি ব্যবহার করে, নারী উদ্যোক্তারা তাদের অনলাইন ব্যবসায় সাফল্য লাভ করতে পারেন। ভোক্তাদের চাহিদার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে এবং ধারাবাহিকভাবে ব্যতিক্রমী পণ্য বা পরিষেবাদি সরবরাহ করা সম্ভব হলে নারী উদ্যোক্তারা সহজেই ডিজিটাল বিপ্লবকে আলিঙ্গন করতে পারবেন এবং অনলাইন ব্যবসায়িক সাফল্যে সফল হতে পারবেন।