যে কোনো ব্যবসায় সফল এবং লাভবান হতে হলে প্রথমেই সেই ব্যবসা সম্পর্কে গভীরভাবে জ্ঞান অর্জন করা জরুরি। ব্যবসার সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো বুঝতে হবে, পাশাপাশি যাদের পূর্বে ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদের পরামর্শও গুরুত্বপূর্ণ।
এই উদ্দেশ্যে, আজ আমরা পাইকারি ব্যবসা বা হোলসেল বিজনেস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো, যা আপনাদের কাজে লাগতে পারে।
পাইকারি ব্যবসা কি?
ব্যবসা অনেক রকমের হয়, তার মধ্যে একটি হলো পাইকারি ব্যবসা বা Wholesale Business.
পাইকারি ব্যবসা হলো এমন এক ধরনের ব্যবসা যেখানে ব্যবসায়ী সরাসরি উৎপাদনকারী বা নির্মাতার থেকে পণ্যসমূহ ক্রয় করে সেই পণ্য খুচরা বিক্রেতার কাছে পৌছে দেয়৷
অন্য ভাবে বলতে গেলে,
হোলসেল বিজনেস বলতে এমন এক ধরনের ব্যবসার মডেলকে বুজায় যেখানে পাইকার অনেক বেশি পরিমাণে পণ্য সরাসরি উৎপাদকের কাছ থেকে ক্রয় করে এবং পরবর্তীতে সেই পণ্যগুলো চাহিদা অনুযায়ী একাদিক খুচরা বিক্রেতা বা অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন।
পাইকাররা সাধারণত ভোক্তাদের কাছে সরাসরি পণ্য বিক্রি করেন না, বরং খুচরা বিক্রেতার কাছে পণ্য সরবরাহ করে। খুচরা বিক্রেতা পরবর্তীতে ভোক্তাদের কাছে সরাসরি সেই পণ্যগুলো বিক্রি করে থাকে।
উদাহরণস্বরূপ, একজন পাইকার অনেক বেশি পরিমাণে পণ্য যেমন ১০০০০ ইউনিট একবারে ক্রয় করে এবং সে সেগুলো খুচরা বিক্রেতাদের কাছে বিভিন্ন ইউনিটে কম দামে বিক্রি করে। যারা পরে সেই পণ্যগুলো আলাদা আলাদা ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করবে।
বাস্তব উদাহরণ:
বাংলাদেশে গার্মেন্টস এবং টেক্সটাইল সেক্টরে পাইকার ব্যবসায়ীরা বড় পরিসরে পোশাক সামগ্রী তৈরি করে এবং তা খুচরা বিক্রেতাদের বা অন্যান্য ছোট ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে। গুলিস্তান, বঙ্গবাজার, কিংবা ইসলামপুর এলাকায় অনেক পাইকারি ব্যবসা রয়েছে যারা বড় বড় শপিং মল কিংবা খুচরা বিক্রেতাদের জন্য পোশাক সরবরাহ করে।
মূলত এটিই হলো পাইকারি ব্যবসার মূল ধারণা।
পাইকারি ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন?
পাইকারি ব্যবসা শুরু করার আগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা দরকার। ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর, প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে কোন পণ্য নিয়ে ব্যবসা করা হবে তা নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিশ্চিত হলে, পাইকারি ব্যবসা শুরুর প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন হয়। এরপর, কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করা প্রয়োজন, যা একজনকে সফল পাইকারি ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হয়।
ইনভেস্টমেন্ট রেডি করা:
যে পণ্য নিয়ে ব্যবসা করতে চান সেই পণ্য নিয়ে ইতোমধ্যে যারা ব্যবসা করে তাদের সাথে সবার আগে যোগাযোগ করুন। সম্ভাব্য কত টাকা ইনভেস্ট করতে হবে সে সম্পর্কে একটি ধারণা নিন। এরপর আপনি নিজের কাছে সেই ইনভেস্টমেন্ট বা মূলধন রেডি করুন।
যদি আপনার নির্ধারিত পণ্যটির ইনভেস্টমেন্ট আপনার কাছে বেশি মনে হয় তাহলে আপনার সুবিধামত পণ্য নির্বাচন করুন যেটায় আপনি ইনভেস্ট করতে পারবেন। মূলধন ব্যবস্থা করা ছাড়া সামনের দিকে আগানো উচিত নয়। নির্বাচিত পণ্যের সাপ্লায়ার এর সাথে যোগাযোগের মাধ্যমেও ইনভেস্টমেন্ট সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব।
সাপ্লাইয়ারের সাথে যোগাযোগ করা:
নির্বাচিত পণ্য কোথা থেকে সরবরাহ করা হয় তা খুঁজে বের করা গুরুত্বপূর্ণ। ভালো মানের পণ্য তুলনামূলকভাবে কম দামে কোথায় পাওয়া যায়, সেটি অনলাইন কিংবা অফলাইনে খুঁজে বের করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কাপড়ের ব্যবসার পরিকল্পনা থাকে, তাহলে বিভিন্ন গার্মেন্টস থেকে কাপড়ের নমুনা দেখা এবং দাম সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যেতে পারে।
সবকিছু বিবেচনায় রেখে যেখান থেকে মানসম্মত পণ্য সঠিক মূল্যে পাওয়া যাবে, সেখান থেকেই সংগ্রহ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে, পণ্যের গুণগত মান সঠিকভাবে যাচাই করতে পারে এমন দক্ষ কাউকে পরামর্শক হিসাবে সঙ্গে রাখা যেতে পারে।
স্টোর হাউজ রেডি করা:
শুধু পণ্য কিনলেই তো হবে না সেই পণ্য গুদামজাতও করতে হবে সঠিক ভাবে। এক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে কোন পণ্যের কোথায় গুদামজাত করলে ভালো হবে সেটি আপনাকে বুঝতে হবে। যেমন পঁচে যায় এমন পণ্য গুলো এমন কোথাও গুদামজাত করতে হবে যেখানে সেগুলো সহজে পঁচবে না। মোট কথা আপনার পণ্যের জন্য ভালো হবে এমন স্টোর হাউজ রেডি করতে হবে।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস রেডি করা:
ব্যবসা করতে গেলে সরকারি কিছু ডকুমেন্টস আপনার দরকার হবে। অনেকেই বলে প্রথমেই এগুলোর দরকার নেই। তবে যদি আপনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করতে চান তাহলে এগুলো আপনার তৈরি করে রাখা দরকার। যখন আপনি ব্যবসায় মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করে ফেলবেন তখন যদি আপনার কোন সমস্যা হয় তাহলে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস না থাকলে বিপদে পড়তে হবে। তাই প্রয়োজনীয় সরকারী ডকুমেন্টস গুলো প্রস্তুত করে ফেলুন।
ক্রেতাদের কাছে যাওয়া:
এটি হলো একদম শেষ ধাপ। আপনার পণ্যের ক্রেতা কারা, আগে তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের কাছে যান আপনার পণ্য এবং আপনার কাছ থেকে কী কী সুবিধা পাবে, তা তাদের খুলে বলুন। প্রয়োজনে তাদের বিনামূল্যে কিছু পণ্য ট্রায়াল হিসেবে দিন। এভাবে ক্রেতাদের সাথে এনগেজড হবেন এবং আপনার সেলও আস্তে আস্তে বাড়বে।
সততা এবং ধৈর্য:
সততা এবং ধৈর্য দিয়ে পৃথিবীর যেকোন কাজ খুব সহজেই করা যায়৷ আপনি আপনার ব্যবসায় সৎ থাকুন, ধৈর্য ধারণ করুন সফলতা আসবেই।
পাইকারি ব্যবসায়ের সুবিধা?
যেকোনো সাধারণ ব্যবসার চেয়ে পাইকারি ব্যবসা কিছুটা অন্যরকম। এ কারণে এই ব্যবসার সুবিধাও অনেক ক্ষেত্রে অনেক বেশি। যেমন-
কম বিনিয়োগে বেশি পণ্য ক্রয়:
পাইকারি ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এতে অল্প টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে অধিক পরিমাণে একেবারে পণ্য ক্রয় করা যায়। ফলে পণ্যের দাম তুলনামূলক ভাবে কম হয়।
কম প্রতিযোগিতা:
হোলসেল বিজনেস এ খুচরা বাজারের তুলনায় কম প্রতিযোগিতা থাকে। কারণ, খুচরা ব্যবসায়ীরা একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে কিন্তু পাইকারি পর্যায়ে সেভাবে অনেক বিক্রেতা থাকে না।
এক ঢিলে দুই পাখি:
পাইকারি ব্যবসায়ীরা একই সাথে উদ্যোক্তা এবং উৎপাদকের বিক্রয় প্রতিনিধি বা এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে। যা ব্যবসায়ের পরিধিকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
পরিবহন ব্যয়:
এ ব্যবসার ক্ষেত্রে উৎপাদক বা সরবারহকারী পণ্যের পরিবহন ব্যয় বহন করে। যা ব্যবসায়ীর খরচ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
সরাসরি প্রস্তুতকারক থেকে পণ্য ক্রয়:
পাইকারী ব্যবসায়ের আরেকটি সুবিধা হলো তারা সরাসরি আমদানীকারক বা উৎপাদনকারীর কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করতে পারে। এতে ঐ পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকে, যার ফলে প্রতারিত সম্ভাবনা কমে যায়।
বাজারে সহজ প্রবেশাধিকার এবং প্রচারণার সহজলভ্যতা:
পাইকারি ব্যবসায় বাজারে প্রবেশ করা তুলনামূলকভাবে সহজ। পণ্য উৎপাদন বা নিজস্ব ব্র্যান্ডের প্রয়োজন ছাড়াই আপনি সহজে বড় পরিসরে পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রি করতে পারবেন।
পণ্যের ক্রেতা যেহেতু খুচরা এবং ছোট ব্যবসায়ী তাই তাদের কাছে প্রচারণা চালানো অনেক সহজ হয়ে যায়।
দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক স্থাপন:
হোলসেল বিজনেস এ দীর্ঘমেয়াদি ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপন করা সহজ হয়। আপনি একবার খুচরা বিক্রেতাদের বা অন্যান্য পাইকারদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করলে তারা নিয়মিতভাবে আপনার কাছ থেকে পণ্য কিনবে।
কম অপারেশনাল খরচ:
খুচরা বিক্রেতাদের তুলনায় পাইকারি ব্যবসায়ীদের অপারেশনাল খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়, যেমন দোকানের খরচ বা অনেক কর্মচারী রাখার প্রয়োজন নেই। এতে ব্যবসায়ের পরিচালন ব্যয় কম থাকে।
অন্যান্য সুবিধা:
এ ব্যবসার মাধ্যমে গুদামজাতকরণের সুবিধা পাওয়া যায়। যেহেতু বিপুল পরিমাণ পণ্য নিয়ে পাইকারি ব্যবসা করা হয়, তাই এতে ভোক্তাদের আকর্ষণ করাও সহজ হয় এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ পাইকারি ব্যবসার নিয়মিত ক্রেতা হতে পারে।
পাইকারি ব্যবসায়ের অসুবিধা?
সব ব্যবসাতেই লাভ-ক্ষতি আছে। পাইকারি ব্যবসাতেও কিছু অসুবিধা আছে। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকলে ব্যবসায় ক্ষতি কম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিষয়গুলো হলো-
যেকোন স্থানে এই ব্যবসা স্থাপন করা যায় না
পাইকারি ব্যবসার সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো কেউ চাইলেই যেকোনো জায়গায় হোলসেল বিজনেস নিয়ে বসতে পারে না। কারণ পাইকারী ব্যবসা এমন একটি মধ্যস্থ ব্যবসা যারা সাধারণত নিজেরা পণ্য উৎপাদন করে না, তারা অন্যের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে। সে কারণে পাইকারী ব্যবসায় উৎপাদক ও ক্রেতা বা ভোক্তার মাঝামাঝি অবস্থান করে।
ভোক্তার চাহিদা পূরণে ব্যর্থতা
পাইকারি ব্যবসায় বিপুল পরিমাণ পণ্যের ভান্ডার। তারপরও এই ব্যবসায় সবসময় ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করা যায় না। যেহেতু সীমিত সংখ্যক পণ্যের পাইকারি ব্যবসা করা যায়।
বিচিত্র পণ্যের সমাবেশ ঘটানো যায় না
এই ব্যবসার আরেকটি অসুবিধা হলো এতে বিচিত্র পণ্যের সমাবেশ ঘটানো যায় না। যেমন- আপনি তাঁতের শাড়ির বিজনেস শুরু করলেন, কিছুদিন পর মনে হলো আপনি থ্রিপিসও বিক্রি করবেন কিন্তু এই ব্যবসায় চাইলেই নতুন পণ্য নিয়ে কাজ শুরু করা যায় না৷
অধিক মূলধন
এই ব্যবসায় পাইকারী ব্যবসায়ীর অধিক মূলধন বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়। কারণ তাকে বিপুল পরিমাণে পণ্য ক্রয় করতে হয়, আবার সেই পণ্য বিক্রয় না হওয়া পর্যন্ত গুদামজাতকরণ করতে হয়।
অন্যদিকে, একজন পাইকারি ব্যবসায়ী উৎপাদনকারী ও খুচরা ব্যবসায়ীকেও ব্যবসা স্বাভাবিক রাখার জন্য আর্থিক সুবিধা দিয়ে থাকে। পাইকারের পুঁজি খুচরা ব্যবসায়িদের তুলনায় অধিক থাকে। এই ব্যবসা পরিচালনা করতেও প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয়। এছাড়া মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে অনেক সময় পাইকাররা পণ্যের উচ্চমূল্য ধার্য করে।
একক প্রতি মুনাফা
পাইকারী ব্যবসার আরেকটি অসুবিধা হলো ক্রয়কৃত পণ্যে একক প্রতি সামান্য মুনাফা ধরে বিক্রয় করা হয়। অধিক পরিমাণে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হয় বলে পাইকারি ব্যবসায় থেকে একক প্রতি মুনাফা অর্জন করা যায়। অন্যদিকে, পণ্য বিক্রয় কম হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।
অত্যাধিক ঝুঁকি গ্রহণ
অন্য যেকোনো ব্যবসার চেয়ে এই ব্যবসায় ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। অধিক পণ্য ক্রয়, পণ্য গুদামজাতকরণে মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করতে হয় যা সবসময় পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে উঠে আসবে কি-না তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। পাইকারি ব্যবসায় ঝুঁকি যেমন বেশি, সততার সাথে কৌশল খাটাতে পারলে লাভের পরিমাণও অনেক বেশি থাকে।
তাই বুঝেশুনে অন্যান্য পাইকারি ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে এই ব্যবসায় আসা উচিত। এতে পাইকার হিসেবে দারুণ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়।
১০ টি পাইকারি ব্যবসার ধারণা
যেকোন ব্যবসা শুরু করার আগে সঠিক বিষয়টি সিলেক্ট করে নেওয়া সবার আগে জরুরি। যদি সঠিক বিষয়টি আপনি সিলেক্ট করে ফেলেন তাহলে এই সংক্রান্ত সকল বিষয় আপনার কাছে সহজ ও সমাধানযোগ্য মনে হবে৷ আপনি যে পণ্যটি নিয়ে ব্যবসা শুরু করছেন, সেটির বাজারে চাহিদা কেমন তা নিয়ে যদি আপনার ধারণা না থাকে, তাহলে ব্যবসাটি মুখ থুবড়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে।
চলুন দেখে নিই কোন পণ্যগুলো আপনার পাইকারি ব্যবসার জন্য দারুণ লাভজনক হতে পারে-
১) স্টেশনারি পণ্যের ব্যবসা
স্টেশনারি পণ্য বলতে বই, খাতা, কলম ইত্যাদি পণ্য বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ মুদির দোকানে আমরা যেসব পণ্যের খোজ করে থাকি এগুলোই স্টেশনারি পণ্য। স্কুল থেকে শুরু করে অফিস আদালত সব জায়গাতেই এই স্টেশনারি পণ্যের ব্যবহার রয়েছে। এই ব্যবসাটি তাদের জন্যই সবচেয়ে ভালো হবে যাদের ইনভেস্টমেন্ট তুলনা মূলক কম। কম ইনভেস্টমেন্টে এটি খুব ভালো একটি পাইকারি ব্যবসা হতে পারে।
২) টি-শার্টের ব্যবসা
শুধু দেশেই নয় সারা পৃথিবীতে টি-শার্টের চাহিদা ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। টি-শার্ট বিজনেসের মেইন পয়েন্ট হলো টি-শার্ট ডিজাইন। যার ডিজাইন যত সুন্দর হয় তার টি-শার্টের সেলের পরিমাণ তত বেশি হয়। এক্ষেত্রে অনেকেই উৎপাদনকারীদের অর্ডার দিয়ে নিজেদের মনের মতো কাস্টমাইজড টি-শার্ট বানিয়েও সেল করতে পারে।
৩) কসমেটিকস সামগ্রীর ব্যবসা
বর্তমান সময়ে নারীদের সাজসজ্জার জন্য কসমেটিকস সামগ্রির প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়েছে বাজারে। অনেক নারীরাই বেশি দাম দিয়ে উন্নত মানের সঠিক পণ্যটি কেনার ব্যাপারে খুব সচেতন। তাই আপনি যদি ভালো মানের পণ্যের ব্যবসা শুরু করতে পারেন এবং ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন, এই কসমেটিকস ব্যবসায় আপনি অনেক উন্নতি করতে পারবেন।
৪) জিন্স প্যান্ট ও শার্টের ব্যবসা
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলো প্যান্ট এবং শার্টের পাইকারি ব্যবসা। এছাড়াও বাজারে জিন্স প্যান্ট ও টি-শার্টের প্রচুর ডিমান্ড রয়েছে। তবে সমস্যা একটিই। এই ব্যবসায় আসতে হলে বেশ মোটা অংকের টাকা ইনভেস্ট করতে হবে আপনাকে।
৫) জুতার পাইকারি ব্যবসা
আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় আরেকটি পণ্য হচ্ছে জুতা। তাই জুতার পাইকারী ব্যাবসা করে আপনি ভালো ক্যারিয়ার গঠন করতে পারবেন। জুতার পাইকারী ব্যবসার আরেকটি ভালো দিক হলো এখানে আপনি আরেকটু বেশি ইনভেস্টমেন্ট দিয়ে নিজেই জুতা তৈরি নিজে বিক্রি করতে পারবেন এক্ষেত্রে আপনার লাভের পরিমাণও বেশি হবে।
৬) বাচ্চাদের খেলনার ব্যবসা
পৃথিবীর প্রতিটা বাচ্চারই শৈশব কাটে খেলনার সাথে৷ বর্তমানে শপিং কমপ্লেক্সগুলোয় গেলে দেখতে পারবেন কেমন জাঁকজমকভাবে সাজানো হয় খেলনার দোকানগুলো। খেলনার প্রচুর চাহিদাও রয়েছে এবং আপনি চাইলে অল্প বিনিয়োগে খেলনার পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারবেন।
৭) গিফট আইটেমের ব্যবসা
পৃথিবীতে প্রতিদিনই কারো না কারো জন্মদিন বা কোন না কোন অনুষ্ঠান হয়েই চলেছে। এসব অনুষ্ঠানে দেওয়ার জন্য অনেকেই উপহার কিনে। তাই গিফট আইটেমের চাহিদা অনেক বেশি। আপনি চাইলে অল্প বিনিয়োগেই গিফট আইটেমের পাইকারী ব্যাবসা শুরু করতে পারেন৷
৮)শুকনো খাবার পণ্যের ব্যবসা
আপনি প্রতিদিনই দোকান থেকে নানা ধরনের শুকনো খাবার কিনেন। এসব খাবারগুলোর মধ্যে চানাচুর, বিস্কুট ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আপনি চাইলে এসব পণ্যের ব্যাবসাও করতে পারেন। তবে খাবার পণ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার একটি রিস্ক থাকে তাই এগুলোকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। তার জন্য মোটা অংকের ইনভেস্টমেন্টের দরকার হয়।
৯) ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ব্যবসা
আমাদের জীবনের দৈনন্দিন একটি বিষয় হলো ইলেক্ট্রিসিটি। যা ছাড়া আমরা একটি মূহুর্তও চলতে পারি না। ইলেক্ট্রনিক পণ্যের বেশ চাহিদা বাজারেও আছে। বাজারে অনেক অনেক রমকের ইলেক্ট্রনিক পণ্য রয়েছে আপনি চাইলে সেসব পণ্যের পাইকারি ব্যবসা শুরু করতে পারেন। কিন্তু ইলেক্ট্রনিক পণ্যগুলো তুলনামূলক দাম বেশি হওয়ায় ইনভেস্টমেন্ট বেশি দরকার হয়।
১০) চকলেটের পাইকারি
আমরা আমাদের শুভ কাজ বা প্রিয় মানুষদের সব সময়ই চকলেট দিয়েই শুভ কামনা জানা৮। গিফট আইটেমের পাশাপাশি নানা উৎসবে চকলেটেরও চাহিদা আছে। বেশিরভাগ চকলেটই বিদেশ থেকে ইমপোর্ট করা হয়। আপনি নিজে বিদেশ থেকে চকলেট এনে দেশে এই ব্যবসা শুরু করতে পারেন।