ইন্টারনেটের বিস্তার এবং ডিজিটালাইজেশনের যুগে ওয়েব হোষ্টিং কোম্পানির গুরুত্ব অনেক বেশি। তারা গ্রাহকের ওয়েবসাইট গুলিকে সার্ভারে হোস্ট করে, যা আমাদের তথ্য ইন্টারনেটের মাধ্যমে সবার কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
Web Hosting কোম্পানি কী?
ওয়েব হোষ্টিং কোম্পানি হল এমন সব প্রতিষ্ঠান যারা ওয়েবসাইটগুলিকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অ্যাক্সেসযোগ্য করার জন্য সার্ভার স্পেস এবং প্রযুক্তিগত সেবা প্রদান করে।
সহজভাবে বলতে গেলে, যখন আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন, ওয়েব হোষ্টিং কোম্পানি সেই ওয়েবসাইটের ফাইলগুলো একটি সার্ভারে সংরক্ষণ করে এবং তা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে।
ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি কিভাবে কাজ করে?
ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিগুলি বিভিন্ন ধরণের সার্ভার এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওয়েবসাইটগুলি হোস্ট করে। তাদের কাজের মূল বিষয়গুলো হলঃ
সার্ভার সরবরাহ করাঃ ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিগুলি তাদের নিজস্ব ডেটা সেন্টার বা ভাড়া করা সার্ভারে ওয়েবসাইটের ফাইলগুলি সংরক্ষণ করে।
নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগঃ সার্ভারগুলি সব সময় চালু রাখে যাতে ওয়েবসাইটটি ২৪/৭ অনলাইন থাকে।
ব্যান্ডউইথ ও স্পিডঃ যথেষ্ট ব্যান্ডউইথ এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করা।
নিরাপত্তাঃ সাইবার আক্রমণ থেকে ওয়েবসাইট সুরক্ষিত রাখার জন্য বিভিন্ন সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া।
ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি কি ধরনের সেবা দেয়?
ডোমেইন রেজিস্ট্রেশনঃ
ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিগুলি ডোমেইন নাম নিবন্ধন এবং সেটির পরিচালনা সেবা প্রদান করে।
Shared হোস্টিংঃ
এই সেবায় একাধিক ওয়েবসাইট একটি সার্ভার শেয়ার করে হোস্ট করা হয়। এটি সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের হোস্টিং, তবে এর নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং কর্মক্ষমতা তুলনামূলক কম।
VPS হোস্টিংঃ
একটি শেয়ার্ড সার্ভারের মধ্যে ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার (VPS) তৈরি করা হয়, যা শেয়ার্ড হোস্টিংয়ের চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মক্ষমতা প্রদান করে।
Dedicated হোস্টিংঃ
সম্পূর্ণ সার্ভার একটি মাত্র ওয়েবসাইটের জন্য নির্ধারিত থাকে, যা সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ এবং কর্মক্ষমতা প্রদান করে।
Cloud হোস্টিংঃ
একাধিক সার্ভার ব্যবহৃত হয় যা একটি ক্লাউড পরিবেশ তৈরি করে, এটি স্কেলেবিলিটি এবং উচ্চ প্রাপ্যতা প্রদান করে।
সেকিউরিটি সেবাঃ
ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিগুলি ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন সুরক্ষা উপায় সরবরাহ করে, যেমন SSL সার্টিফিকেট, DDoS প্রোটেকশন, ফায়ারওয়াল সেটআপ, এবং নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি প্রস্তুত করা।
বাংলাদেশের এ ধরণের সেবা গুলো কেমন হওয়া উচিত?
বাংলাদেশের জন্য Web Hosting সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট মানদণ্ড পূরণ করা উচিতঃ
- দ্রুত লোডিং টাইম নিশ্চিত করতে হবে।
- উচ্চ আপটাইম (৯৯.৯% বা তার বেশি) থাকা আবশ্যক।
- ২৪/৭ গ্রাহক সেবা সাপোর্ট প্রদান।
- শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন।
- প্রতিযোগিতামূলক মূল্য, যাতে ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা সহজে ব্যবহার করতে পারে।
Web Hosting খাতের সাধারণ পরিসংখ্যান
- ২০২৩ সালে বিশ্বব্যাপী ওয়েব হোস্টিং বাজারের মূল্য ছিল প্রায় ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
- ২০২৭ সালের মধ্যে এই বাজারের মূল্য প্রায় ১৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
- ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ওয়েব হোস্টিং বাজারের আকার প্রায় ৳১,০০০ কোটি (USD ১২.৫ মিলিয়ন) বলে আশা করা হচ্ছে।
- এই বাজার ২০২০ সালের ৳৬০০ কোটি (USD ৭.৫ মিলিয়ন) থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে, যার বৃদ্ধির হার CAGR 16.7%।
- বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১০ কোটিরও বেশি, যা ওয়েব হোস্টিং সেবার জন্য বিশাল সম্ভাবনার বাজার সৃষ্টি করেছে।
এই কোম্পানিগুলো কেন তালিকাভুক্ত করা হলঃ
বাংলাদেশে Bipony.com বিজনেস ডিরেক্টরি এবং রিভিউ সেবা দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে স্থানীয় গ্রাহকদের তাদের কোম্পানি গুলো লিস্টিং করার এবং ক্রেতাদের কাছ থেকে রিভিউ সংগ্রহ করার সুযোগ দিচ্ছে। গ্রাহকদেরকে পন্য বা সেবা সম্পর্কে আরো বেশি ধারণা দেওয়ার জন্য কোম্পানিগুলো BIPONY তে তালিকাভুক্ত হচ্ছে।
তাছাড়া গ্রাহকরা যাতে পন্য, সেবা বা কোম্পানিগুলোর সম্পর্কে নিজেদের মতামত প্রদান করতে পারে যা আগ্রহী গ্রাহকদেরকে ব্যবসা সম্পর্কে আরও জানতে এবং কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একটি সঠিক মতামত পেতে সাহায্য করবে।
আপনার যদি কোনো পণ্য বা সেবা প্রয়োজন হয়, তখন আপনি BIPONY তে সার্চ করতে পারেন এবং আপনার এলাকার নিকটবর্তী প্রতিষ্ঠান গুলো খুঁজে পেতে পারেন।
বাংলাদেশে সেরা ওয়েব হোষ্টিং কোম্পানি বাছাইয়ের যে বিষয় গুলো মাথায় রাখতে হবে:
১. আপটাইম গ্যারান্টিঃ
সার্ভার আপটাইম গ্যারান্টি দেখে নিন, যেন ওয়েবসাইটটি সর্বদা অনলাইন থাকে।
২. লোডিং স্পিড:
হোস্টিং কোম্পানির সার্ভারের লোডিং স্পিড কেমন তা পরীক্ষা করুন।
৩. গ্রাহক সহায়তা:
২৪/৭ গ্রাহক সহায়তা প্রদান করে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
৪. সিকিউরিটি ফিচারস:
হোস্টিং কোম্পানি কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রদান করে তা যাচাই করুন।
৫. মূল্য নির্ধারণ:
বিভিন্ন প্ল্যানের মূল্য তুলনা করে দেখুন এবং সাশ্রয়ী মূল্যের প্ল্যান বেছে নিন।
৬. রিভিউ ও রেটিং:
অন্যান্য ব্যবহারকারীদের রিভিউ এবং রেটিং দেখে নিন।
৭. সার্ভারের অবস্থান:
সার্ভারের অবস্থান কাছাকাছি হলে ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্স ভালো হতে পারে।
এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে সেরা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি বেছে নেওয়া গেলে, আপনার ওয়েবসাইটটি নিরবচ্ছিন্নভাবে এবং সুরক্ষিতভাবে পরিচালিত হবে।