ই-কমার্স হলো অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট কিংবা সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে পণ্য ও পরিষেবার ক্রয় কিংবা বিক্রয় করার পদ্ধতি। ই-কমার্স কে সংক্ষেপে অনলাইন স্টোর বা ডিজিটাল স্টোর বলা যায়। যা পিজিক্যাল স্টোরের পরিবর্তে গ্রাহকদের অনলাইনে কেনাকাটা করার সুযোগ করে দেয়।
ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহার এবং প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে বাংলাদেশে ই-কমার্স দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। বর্তমানে, ই-কমার্স আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। অনলাইনে কেনাকাটা এখন আর শুধুমাত্র ঢাকা বা চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে সীমাবদ্ধ নেই, বরং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে।
ইকমার্স কোম্পানিগুলো কি ধরনের সেবা প্রদান করে থাকেঃ
বিশাল সংগ্রহ থেকে পণ্য বাছাইকরণ:
ই-কমার্স কোম্পানিগুলি সাধারণত পিজিক্যাল স্টোরের তুলনায় পণ্যের বিশাল সংগ্রহ থেকে পণ্য বাছাইয়ের সুযোগ দিয়ে থাকে। যা ক্রেতাদের তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি আরও সহজে খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
সুবিধাজনক ও সহজ উপায়ে কেনাকাটাঃ
ক্রেতারা তাদের ঘরে বসেই যেকোনো সময় ই-কমার্স ওয়েবসাইট বা অ্যাপ থেকে কেনাকাটা করতে পারে। এটি তাদের সময় এবং অর্থ সাশ্রয় করতে পারে।
একাদিক পেমেন্ট অপশন:
ক্রেতাদের সুবিদ্ধার্থে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, মোবাইল ব্যাংকিং বা অন্যান্য অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে পণ্যের মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা থাকে।
পণ্য পর্যালোচনা এবং রিভিউঃ
ক্রেতারা অন্যান্য গ্রাহকদের পণ্য পর্যালোচনা এবং রিভিউ পড়ার সুযোগ থাকে যা তাদের ক্রয় সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে।
ক্যাশ অন ডেলিভারি (COD) সুবিধা
অনেক ইকমার্স কোম্পানি ক্রেতাদের পণ্য ডেলিভারির সময় নগদ অর্থে পেমেন্ট করার সুযোগ প্রদান করে। এটি এমন ক্রেতাদের জন্য সুবিধাজনক যাদের কাছে ক্রেডিট কার্ড বা অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি নেই।
দ্রুত এবং সহজ ডেলিভারিঃ
E-Commerce কোম্পানিগুলি বিভিন্ন ডেলিভারি কোম্পানির মাধ্যমে ক্রেতাদের কাছে দ্রুত এবং সহজে পণ্য ডেলিভাবি দিয়ে থাকে। অনেক ইকমার্স কোম্পানি ট্র্যাকিং তথ্য প্রদান করে যাতে ক্রেতারা তাদের অর্ডারের অবস্থান সম্পর্কে জানা যায়।
সহজ রিটার্ন এবং এক্সচেঞ্জ
E-Commerce কোম্পানিগুলি সাধারণত পণ্য রিটার্ন এবং এক্সচেঞ্জ করার সুযোগ প্রদান করে। এতে ক্রেতারা কোম্পানির পলিসি অনুযায়ী পণ্য রিটার্ন এবং এক্সচেঞ্জ করে নিয়ে পারে।
বাংলাদেশে ই-কমার্সের পরিসংখ্যানঃ
বাংলাদেশে ই-কমার্সের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে কারণ। ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসারের সাথে সাথে আগামী বছরগুলিতে বাজার আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছেঃ
- ২০২৩ সালে, বাংলাদেশের ই-কমার্স বাজারের আকার ছিল প্রায় $১ বিলিয়ন। আশা করা হচ্ছে ২০২৫ সালের মধ্যে এটি $৫ বিলিয়নে পৌঁছাবে।
- বর্তমানে বাংলাদেশে ১০ কোটিরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে এবং এই সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
- স্মার্টফোন ক্রমবর্ধমানভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, যা গ্রাহকদের জন্য অনলাইনে কেনাকাটা করা আরও সহজ করে তুলছে।
- মোবাইল ব্যাংকিং এবং অন্যান্য ডিজিটাল পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহারের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অনলাইনে লেনদেনকে আরও সুবিধাজনক করে তুলছে।
বাংলাদেশে জনপ্রিয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে রয়েছে Daraz, Chaldal, Rokomari, Foodpanda, Evaly, Othoba, Pickaboo, Ajkerdeal, Sajgoj ইত্যাদি
কোম্পানিগুলো কেন Bipony.com এ তালিকাভুক্ত করা হলঃ
বাংলাদেশে Bipony.com বিজনেস ডিরেক্টরি এবং রিভিউ সেবা দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে স্থানীয় গ্রাহকদের তাদের ব্যবসাগুলি লিস্টিং করার এবং ক্রেতাদের কাছ থেকে রিভিউ সংগ্রহ করার সুযোগ দিচ্ছে। গ্রাহকদেরকে পন্য বা সেবা সম্পর্কে আরো বেশি ধারণা দেওয়ার জন্য কোম্পানিগুলো BIPONY তে তালিকাভুক্ত হচ্ছে।
তাছাড়া গ্রাহকরা যাতে পন্য, সেবা বা কোম্পানিগুলোর সম্পর্কে নিজেদের মতামত প্রদান করতে পারে যা আগ্রহী গ্রাহকদেরকে ব্যবসা সম্পর্কে আরও জানতে এবং কেনাকাটার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে একটি সঠিক মতামত পেতে সাহায্য করবে। আপনার যদি কোনো পণ্য বা সেবা প্রয়োজন হয়, তখন আপনি BIPONY তে সার্চ করতে পারেন এবং আপনার এলাকার নিকটবর্তী প্রতিষ্ঠান গুলো খুঁজে পেতে পারেন।
সেরা ইকমার্স কোম্পানি চেনার উপায়ঃ
একটি সেরা ই-কমার্স কোম্পানি নির্বাচন করা আপনার চাহিদা এবং পছন্দগুলির উপর নির্ভর করে। তবে, এখানে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে:
১. খ্যাতি এবং বিশ্বাসযোগ্যতাঃ
- কোম্পানিটি কি কতদিন ধরে ব্যবসায় আছে?
- বাজারে তাদের কি সুনাম বা খ্যাতি আছে?
- তাদের কি গ্রাহকদের কাছ থেকে ইতিবাচক রিভিউ আছে?
২. পণ্যের মান এবং নায্য মূল্যঃ
- কোম্পানি কি আপনার চাহিদা অনুযায়ী পণ্য অফার করে?
- তাদের দাম কি প্রতিযোগিতামূলক?
- তারা কি কোনও ছাড় বা অফার দিয়ে থাকে?
- তাদের শিপিং এবং রিটার্ন নীতি কি ন্যায্য?
৩. গ্রাহক পরিষেবাঃ
- কোম্পানির গ্রাহক পরিষেবার মান কেমন?
- তাদের সাথে যোগাযোগের জন্য কি বিভিন্ন ও বিকল্প মাধ্যম আছে?
- তারা কি দ্রুত এবং কার্যকরভাবে গ্রাহক প্রশ্ন এবং সমস্যা সমাধান করে?
৪. ওয়েবসাইট এবং অ্যাপঃ
- কোম্পানির ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ব্যবহার করা কি সহজ?
- এটি কি পণ্যের তথ্য এবং ছবিগুলির সঠিক তথ্য প্রদান করে?
৫. অন্যান্য বিষয়ঃ
কোম্পানি কি বিভিন্ন পেমেন্ট মেথড অফার করে? তাদের শিপিং ব্যবস্থা দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্য কিনা? তারা রিটার্ন এবং এক্সচেঞ্জের জন্য একটি সহজ নীতি অনুসরণ করে কিনা ?
উপরের নির্দেশিত বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আপনি সহজেই একটি সেরা ইকমার্স কোম্পানি বাছাই করতে সক্ষম হবেন।