সু-স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। বাংলাদেশের মানুষের মাঝে এখন স্বাস্থ্য সচেতনতা অতীতের তুলনায় বাড়ছে। সু-সাস্থ্য বজায় রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত শরীরচর্চা। আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণে মাঠ ও পার্ক নেই। নিয়মিত শরীরচর্চার অভাবে অনেকের শরীরে কোলেস্টেরল, অতিরিক্ত চর্বির কারণে হূদরোগসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। তাদের জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে যায় জিমে যাওয়া।
বর্তমানে, শারীরিক সুস্থতার ধারণা শুধুমাত্র ক্রীড়াবিদ বা বডি বিল্ডারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে বা ফিট থাকতে অনেকেই ছুটে চলে যান জিমে। আর এ জন্যই দিনে দিনে বাড়ছে Gymnasium বা ব্যায়ামাগার কোম্পানি।
জিম সেন্টার কি?
ব্যায়াম করা এবং শারীরিক ভাবে ফিট থাকার জন্য এমন একটি জায়গা যেখানে বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জাম যেমন ট্রেডমিল, বেঞ্চ, শোল্ডার প্রেস মেশিন ইত্যাদির মাধ্যমে ওয়ার্কআউট করার সু-ব্যবস্থা থাকে।
আপনার শারীরিক সুস্থতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী হচ্ছে Gymnasium। সব বয়সীদের জন্যই GYM দরকার। কাজের ভিড়ে আমরা ভুলে যাই কিভাবে নিজেদের সুস্থ রাখব। মন ভালো রাখতেও সুস্থ দেহ অত্যাবশ্যক।
তবে ভুল ব্যায়াম করে অসুস্থ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। আবার বাসায় নিয়মিত ব্যায়াম করাও হয়না, পরিবেশও থাকে না অনেক সময়। এ জন্য অনেকেরই পছন্দ জিমে যাওয়া, যাতে দক্ষ ট্রেইনারের তত্বাবধানে থেকে সঠিক ব্যায়ামটা করা যায় নিয়মিত।
আরো পড়ুন: বিনা পুঁজিতে শুরু করতে পারবেন এমন ২৫টি ব্যবসার আইডিয়া
জিমনেশিয়াম প্রতিষ্ঠান গুলো কিভাবে সেবা প্রদান করে
জিমনেশিয়ামগুলি স্বাস্থ্য ও ফিটনেস উন্নত করার জন্য বিভিন্ন ধরণের ব্যায়াম সরঞ্জাম এবং ক্লাস অফার করে। সদস্যরা তাদের পছন্দের অনুযায়ী ব্যায়াম করতে পারেন। কিছু Gymnasium ব্যক্তিগত প্রশিক্ষকও সরবরাহ করে।এই কোম্পানিগুলো সাধারণত নীচের কাজগুলো করে থাকে:
১. সদস্য সংগ্রহ: নতুন সদস্যদের জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ ও সদস্যপদ প্রস্তাব করা হয়।সদস্যরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী ব্যায়াম করতে পারেন।
২. ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ: দক্ষ প্রশিক্ষকদের দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।প্রশিক্ষক ওজন কমানো, পেশী সুদৃঢ়, ফিটনেস এর উপর নির্ভর করে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন।
৩. ফিটনেস প্রোগ্রাম: বিভিন্ন ফিটনেস প্রোগ্রাম যেমন ওজন কমানো, পেশী বৃদ্ধি, স্ট্রেংথ ট্রেনিং ইত্যাদি প্রস্তাব করা।
৪. আধুনিক সরঞ্জাম: উচ্চমানের আধুনিক সরঞ্জাম সুবিধা প্রদান করা।
৫. নিয়মিত পর্যবেক্ষণ: ট্রেইনার দ্বারা সদস্যদের স্বাস্থ্য ও ফিটনেসের অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা।
Fitness and Gym Center যে ধরনের সেবা দেয়:
আধুনিক জিমনেসিয়ামগুলো সাধারণত নিম্নোক্ত সেবা দিয়ে থাকেঃ
- বিভিন্ন ধরণের ব্যায়াম সরঞ্জাম: ট্রেডমিল, ওজন মেশিন, ফ্রি ওয়েট, কার্ডিও মেশিন ইত্যাদি।
- বিভিন্ন ধরণের ব্যায়াম ক্লাস: ফিটনেস অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের ব্যায়ামের ক্লাস নেয়া হয়। যেমন,- যোগব্যায়াম, এ্যারোবিকস, স্ট্রেঞ্জি, জুম্বা ইত্যাদি।
- ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণ: সার্টিফাইড প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে ব্যায়াম করার সুযোগ।
- লকার রুম এবং বাথরুম: সদস্যদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার জন্য লকারের এবং বাথরুমের ব্যবস্থা রাখা।
- ফিটনেস অ্যাসেসমেন্ট: স্বাস্থ্য মূল্যায়ন এবং ফিটনেস মূল্যায়ন।
- খাদ্য পরিকল্পনা: পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা খাদ্য পরিকল্পনা এবং পরামর্শ।
- জুস বার এবং স্ন্যাক বার: স্বাস্থ্যকর খাবার এবং পানীয় সরবরাহ করে।
জিমনেশিয়াম সেবাটি কেমন হওয়া উচিত:
বাংলাদেশের জিমনেসিয়ামের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। তবে, ভালো জিমনেসিয়ামের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে:
- ভালো পরিবেশ: Gymnasium পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন এবং আরামদায়ক হওয়া উচিত। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা জরুরী।
- আধুনিক সরঞ্জাম: মানসম্পন্ন এবং আধুনিক সরঞ্জাম থাকতে হবে এবং সরঞ্জামগুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত এবং সচল অবস্থায় থাকা উচিত।
- যোগ্য প্রশিক্ষক: অভিজ্ঞ এবং সার্টিফাইড প্রশিক্ষক রাখা উচিত।
- বিভিন্ন ধরণের ব্যায়াম ক্লাস: সদস্যদের পছন্দের অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের ব্যায়াম ক্লাস অফার করা উচিত।
- বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ: সদস্যদের জন্য কার্যকর এবং বন্ধুত্বপূর্ণ গ্রাহক সেবা প্রদান।
- সাশ্রয়ী মূল্যে: সদস্যদের যাতে সাশ্রয়ী মূল্যে জিম করতে পারে তার ব্যবস্থা থাকা।
জিমনেসিয়াম ব্যবসার সাধারণ পরিসংখ্যান
বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন আয়ের উৎস বা ক্ষেত্র হতে পারে জিমনেশিয়াম। এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছেই। বর্তমানে শুধুমাত্র ঢাকাতেই ৫০০ এর বেশি জিমনেসিয়াম আছে।
স্ট্যাটিস্তার মতে, ২০২৪ সালে এ শিল্প US$327.70 মিলিয়ন আয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ শিল্প বার্ষিক ১১.০২% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার ফলে 2028 সালের মধ্যে বাজারের পরিমাণ US$497.90m হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
কেন Bipony.com এ তালিকাভুক্ত করা হলঃ
বাংলাদেশে Bipony.com বিজনেস ডিরেক্টরি এবং রিভিউ সেবা দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে স্থানীয় গ্রাহকদের তাদের কোম্পানি গুলো লিস্টিং করার এবং ক্রেতাদের কাছ থেকে রিভিউ সংগ্রহ করার সুযোগ দিচ্ছে। গ্রাহকদেরকে পন্য বা সেবা সম্পর্কে আরো বেশি ধারণা দেওয়ার জন্য কোম্পানিগুলো BIPONY তে তালিকাভুক্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশে Gymnasium বাছাইয়ের যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে
বাংলাদেশে ভালো জিমনেশিয়াম বাছাই করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে:
১. সুবিধা এবং সরঞ্জাম:
- জিমের সরঞ্জামগুলি আধুনিক, মানসম্পন্ন এবং সচল কিনা তা যাচাই করুন।
- ওজন মেশিন, কার্ডিও সরঞ্জাম, এবং অন্যান্য ফিটনেস সরঞ্জামের আছে কিনা দেখুন।
- জিমের পরিবেশ এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা পর্যবেক্ষণ করুন।
২. প্রশিক্ষক এবং কর্মী:
- জিমের ট্রেইনার সার্টিফাইড এবং অভিজ্ঞ কিনা তা নিশ্চিত করুন।
৩. সদস্যপদ প্যাকেজ এবং মূল্য:
- বিভিন্ন সদস্যপদ প্যাকেজ এবং তাদের মূল্য যাচাই করুন।
- আপনার বাজেটের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং মূল্যবান প্যাকেজগুলি বিবেচনা করুন।
- অতিরিক্ত সুবিধা বা ডিসকাউন্ট আছে কিনা তা দেখুন।
৪. সুবিধাসমূহ:
- জিমে অতিরিক্ত সুবিধাসমূহ যেমন যোগা ক্লাস, জুম্বা ক্লাস ইত্যাদি হয় কিনা।
৫. গ্রাহক পর্যালোচনা এবং রেটিং:
- অন্যান্য সদস্যদের মতামত এবং পর্যালোচনা যাচাই করুন। অনলাইনে জিমের রিভিউ এবং পর্যালোচনা দেখে নিন।
৬. পরিকল্পনা এবং সময়সূচী:
- জিমের সময়সূচী এবং ক্লাসের সময়সূচী, সাপ্তাহিক বন্ধ এ সব সম্পর্কে ধারণা নিন।
৭. নিরাপত্তা ব্যবস্থা:
- জিমে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে কিনা, মেয়েদের জন্য নিরাপদ কিনা যাচাই করুন।
এইসব বিষয় মাথায় রেখে একটি ভালো Gymnasium নির্বাচন করলে, আপনার স্বাস্থ্য ও ফিটনেস ধরে রাখতে সহায়ক হবে।