
একটা সময় ছিল যখন ঘড়ি মানেই ছিল শুধু সময় দেখার যন্ত্র। কিন্তু প্রযুক্তির বিবর্তনে সেই ঘড়িই এখন আমাদের হাতে একটি ছোট্ট কম্পিউটারের রূপ নিয়েছে, যা স্মার্ট ওয়াচ নামে পরিচিত। আজকাল স্টাইল স্টেটমেন্ট থেকে শুরু করে হেলথ ট্র্যাকার পর্যন্ত সবকিছুরই অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে এই স্মার্ট ওয়াচ। বাংলাদেশের তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কাছেই এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কিন্তু বাজারে এত ব্র্যান্ড আর মডেলের ভিড়ে নিজের জন্য সঠিক স্মার্ট ওয়াচটি বেছে নেওয়া বেশ কঠিন। তাই আপনার সিদ্ধান্ত সহজ করতে আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব ২০২৫ সালের বাংলাদেশের বাজারের সেরা কিছু স্মার্ট ওয়াচ নিয়ে এবং জানাবো কেনার আগে কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি।
Smart Watch হলো একটি পরিধানযোগ্য কম্পিউটার যা একটি হাতঘড়ির আকারে তৈরি। এটি একটি সাধারণ ঘড়ির আধুনিক ও উন্নত সংস্করণ, যা শুধু সময় দেখানো ছাড়াও আরও অনেক স্মার্ট কাজ করতে পারে। এটিকে আপনার স্মার্টফোনের একটি বর্ধিত অংশ বা এক্সটেনশনও বলা যেতে পারে, যা আপনার কব্জিতে থেকে আপনাকে ফোন ব্যবহার না করেই বিভিন্ন তথ্য ও নোটিফিকেশন পেতে সাহায্য করে।
কেন স্মার্ট ওয়াচ কিনবেন?
স্মার্ট ওয়াচ এখন আর কেবল একটি শখের গ্যাজেট নয়, বরং এটি দৈনন্দিন জীবনের নানা প্রয়োজন মেটানোর একটি স্মার্ট সমাধান।
- স্বাস্থ্য সচেতনতা: হার্ট রেট মনিটরিং, রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা (SpO2) পরিমাপ, ঘুমের হিসাব রাখা এবং দিনে কত কদম হাঁটলেন তা ট্র্যাক করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ফিচারগুলো আপনাকে স্বাস্থ্য সচেতন থাকতে সাহায্য করে।
- সুবিধাজনক যোগাযোগ: স্মার্টফোন পকেট থেকে বের না করেই কল রিসিভ করা, মেসেজ ও সোশ্যাল মিডিয়ার নোটিফিকেশন দেখার সুবিধা পাওয়া যায়।
- ফিটনেস ট্র্যাকার: বিভিন্ন স্পোর্টস মোডের মাধ্যমে আপনার ওয়ার্কআউট, সাইক্লিং বা সাঁতারের মতো অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাক করতে পারবেন। জিপিএস সুবিধার মাধ্যমে আপনার হাঁটা বা দৌড়ানোর পথও ট্র্যাক করা সম্ভব।
- স্টাইল ও পার্সোনালাইজেশন: বিভিন্ন ডিজাইনের স্ট্র্যাপ এবং কাস্টমাইজড ওয়াচ ফেস ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি আপনার স্মার্ট ওয়াচকে নিজের ব্যক্তিত্বের সাথে মিলিয়ে নিতে পারেন।
Smart Watch কেনার আগে যে বিষয়গুলো অবশ্যই দেখবেন
স্মার্ট ওয়াচ আজ আর শুধু ঘড়ি নয়; এটি এখন আপনার পার্সোনাল হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট, নোটিফিকেশন ম্যানেজার এবং ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। তবে কেনার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
১. অপারেটিং সিস্টেম (OS) এবং কম্প্যাটিবিলিটি
এটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। আপনার সাধের স্মার্ট ওয়াচটি যদি ফোনের সাথে ঠিকমতো কথাই বলতে না পারে, তবে এটি একটি দামী খেলনা ছাড়া আর কিছুই নয়। তাই কেনার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন:
- Apple Watch: এটি আভিজাত্য এবং পারফরম্যান্সের শীর্ষে, কিন্তু এর জগৎ শুধু iPhone-এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হন, তবে Apple Watch আপনার জন্য নয়।
- WearOS (Samsung, Fossil, Google Pixel Watch): অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য এটি সেরা অভিজ্ঞতা প্রদান করে। বিশেষ করে Samsung Galaxy Watch সিরিজ স্যামসাং ফোনের সাথে অসাধারণভাবে কাজ করে।
- Custom OS (Huawei, Amazfit, Xiaomi, Realme): এই ব্র্যান্ডগুলোর নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম থাকে। এরা অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোন-উভয়ের সাথেই সংযোগ স্থাপন করতে পারে। তবে মনে রাখবেন, আইফোনের সাথে ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু ফিচার (যেমন: কুইক রিপ্লাই) সীমিত থাকতে পারে।
২. ডিসপ্লে ও ডিজাইন
স্মার্ট ওয়াচ এমন একটি জিনিস যা আপনি সারাদিন পরে থাকবেন এবং শতবার এর দিকে তাকাবেন। তাই এর ডিসপ্লে এবং ডিজাইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ডিসপ্লে প্রযুক্তি: AMOLED ডিসপ্লে বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ এটি শুধু উজ্জ্বল এবং আকর্ষণীয় রঙই দেখায় না, বরং ব্যাটারিও সাশ্রয় করে। প্রখর রোদেও এর স্ক্রিন ঝকঝকে দেখাবে।
- Always-On Display: এই ফিচারটি থাকলে আপনাকে বারবার হাত ঘুরিয়ে বা বাটন চেপে সময় দেখতে হবে না, স্ক্রিন সবসময় মৃদু আলোতে সময় দেখাবে, যা এটিকে একটি সাধারণ ঘড়ির অনুভূতি দেয়।
- ডিজাইন ও উপাদান: আপনার ব্যক্তিত্বের সাথে কোনটি যায়—গোল ডায়াল নাকি চৌকো? মেটাল, পলিকার্বোনেট নাকি সিরামিক বডি? স্ট্র্যাপ পরিবর্তনের সুবিধা আছে কিনা, সেটাও দেখে নিন।
- স্থায়িত্ব ও জলরোধী ক্ষমতা: দৈনন্দিন ঘষা বা পানির ঝাপটা থেকে সুরক্ষা পেতে IP68 বা 5ATM ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স রেটিং থাকা আবশ্যক। 5ATM রেটিং থাকলে আপনি এটি পরে সাঁতারও কাটতে পারবেন।
৩. হেলথ ও ফিটনেস ফিচার
স্মার্ট ওয়াচ কেনার অন্যতম প্রধান কারণ হলো স্বাস্থ্য সচেতনতা। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফিচারগুলো মিলিয়ে নিন।
- বেসিক ফিচার (সবার জন্য জরুরি):
- হার্ট রেট মনিটরিং: এটি আপনার হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা ধরতে সাহায্য করে।
- SpO2 (রক্তে অক্সিজেন): আপনার শারীরিক সুস্থতার একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
- স্লিপ ট্র্যাকিং: আপনার ঘুমের গভীরতা ও মান বিশ্লেষণ করে আপনাকে আরও ভালোভাবে ঘুমাতে সাহায্য করে।
- স্টেপ কাউন্টার: সারাদিনের হাঁটাচলার হিসাব রাখে।
- অ্যাডভান্সড ফিচার (ফিটনেসপ্রেমী বা স্বাস্থ্য-সচেতনদের জন্য):
- বিল্ট-ইন GPS: আপনি যদি দৌড়বিদ বা সাইক্লিস্ট হন, তবে এটি অপরিহার্য। ফোনটাকে বাড়িতে রেখেই আপনি আপনার রুট ও দূরত্ব নির্ভুলভাবে ট্র্যাক করতে পারবেন।
- ECG (ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম): হৃদযন্ত্রের জটিল সমস্যা শনাক্ত করতে সাহায্য করে (শুধুমাত্র প্রিমিয়াম মডেলে পাওয়া যায়)।
- মাল্টি-স্পোর্টস মোড: আপনার পছন্দের খেলাধুলা (সাঁতার, ট্রেডমিল, ইয়োগা ইত্যাদি) ট্র্যাক করার সুবিধা।
৪. ব্যাটারি লাইফ
একটি স্মার্ট ওয়াচের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এর ব্যাটারি। ফিচার যত বেশি, ব্যাটারি তত দ্রুত শেষ হয়।
- ১-২ দিনের ব্যাটারি লাইফ: Apple Watch এবং Samsung Galaxy Watch-এর মতো ফিচার-সমৃদ্ধ ঘড়িগুলোকে প্রায় প্রতিদিনই চার্জ দিতে হয়। আপনি যদি সেরা স্মার্ট ফিচার চান, তবে এইটুকু ছাড় আপনাকে দিতেই হবে।
- ৭-২০ দিনের ব্যাটারি লাইফ: Amazfit, Huawei, Xiaomi বা Realme-এর মতো ব্র্যান্ডগুলো অবিশ্বাস্য ব্যাটারি ব্যাকআপ দেয়। আপনি যদি বারবার চার্জ দেওয়ার ঝামেলা থেকে মুক্তি চান, তবে এগুলো আপনার জন্য সেরা।
- ফাস্ট চার্জিং: আপনার পছন্দের মডেলে ফাস্ট চার্জিং সুবিধা আছে কিনা, তা দেখে নিন। এটি অল্প সময়েই ঘড়িটিকে দিনের শেষে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করে তুলবে।
৫. কানেক্টিভিটি ও ফিচারস
একটি ভালো স্মার্ট ওয়াচ আপনার ফোনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনে।
- ব্লুটুথ কলিং: এটি এখন একটি অপরিহার্য ফিচার। এর মাধ্যমে আপনি ঘড়ি থেকেই সরাসরি কল রিসিভ করতে বা কল করতে পারবেন, যা ড্রাইভিং বা মিটিংয়ের সময় খুব কাজে দেয়।
- থার্ড-পার্টি অ্যাপ সাপোর্ট: WearOS বা watchOS-এ আপনি Strava, Spotify বা Google Maps-এর মতো প্রয়োজনীয় অ্যাপ সরাসরি ঘড়িতেই ব্যবহার করতে পারবেন।
- NFC পেমেন্ট: যদিও বাংলাদেশে এর ব্যবহার সীমিত, তবে বিদেশে ভ্রমণের পরিকল্পনা থাকলে এই ফিচারটি আপনার কেনাকাটাকে অনেক সহজ করে দেবে।
৬. বাজেট ও ব্র্যান্ড
সবশেষে, আপনার বাজেটই আপনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে।
- বাজেট (৩,০০০ – ১০,০০০ টাকা): এই রেঞ্জে Realme, Xiaomi, Haylou, Kieslect-এর মতো ব্র্যান্ডগুলো দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ফিচারসহ চমৎকার সব স্মার্ট ওয়াচ অফার করে।
- মিড-রেঞ্জ (১৫,০০০ – ২৫,০০০ টাকা): এখানে Amazfit এবং Huawei বাজারের সেরা। এরা প্রিমিয়াম ডিজাইন, নির্ভুল সেন্সর এবং অসাধারণ ব্যাটারি লাইফের একটি পারফেক্ট মিশ্রণ ঘটায়।
- প্রিমিয়াম (৩০,০০০+ টাকা): আপনি যদি কোনো আপস ছাড়াই সেরা প্রযুক্তি, সেরা ইকোসিস্টেম এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু চান, তবে Apple Watch এবং Samsung Galaxy Watch সিরিজ আপনার জন্য।
সেরা স্মার্ট ওয়াচ মানে সবচেয়ে দামী বা সবচেয়ে বেশি ফিচারযুক্ত ঘড়িটি নয়। সেরা স্মার্ট ওয়াচ হলো সেটি, যা আপনার জীবনযাত্রার সাথে মিশে যায়। শুধু দামী বা ফিচার দেখে নয়, আপনার লাইফস্টাইল ও প্রয়োজন অনুযায়ী মডেল বেছে নিন।
Best Smart Watch - টেক মার্কেটে সেরা Smart Watch-এর শীর্ষ মডেল ও ব্র্যান্ড
বাংলাদেশে পরিধানযোগ্য প্রযুক্তির (Wearable Technology) বাজার দ্রুতগতিতে প্রসারিত হচ্ছে। বাজারের এই ক্রমবর্ধমান চাহিদার সাথে পাল্লা দিয়ে ব্র্যান্ডগুলো একের পর এক উদ্ভাবনী মডেল নিয়ে আসছে।
নিচে আমরা বাংলাদেশের বাজারের কিছু জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য স্মার্ট ওয়াচ ব্র্যান্ড ও তাদের শীর্ষ মডেলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, যা আপনাকে আপনার প্রয়োজন ও বাজেট অনুযায়ী সেরা স্মার্ট ওয়াচটি বেছে নিতে সাহায্য করবে।
১. Apple Watch
বাংলাদেশে স্মার্ট ওয়াচের চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এর মধ্যে Apple Watch তার শক্তিশালী পারফরম্যান্স, নির্ভুল স্বাস্থ্য সেন্সর এবং আইফোনের সাথে অবিচ্ছেদ্য ইকোসিস্টেমের জন্য বাজারের শীর্ষে অবস্থান করছে। নিচে আমরা Apple Watch এবং এর শীর্ষ মডেলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
Apple Watch - এর মডেল সমূহ
Apple Watch Ultra 2 with Titanium Milanese Loop 2024 |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳৯৭,৯৯০ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ রাগড টাইটানিয়াম কেস, কাস্টমাইজেবল অ্যাকশন বাটন, ৩০০০ নিটস ব্রাইটনেস, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, প্রিসিশন ডুয়াল-ফ্রিকোয়েন্সি GPS, ডাইভ কম্পিউটার ফিচার, সাইরেন। কেস সাইজ: 49mm ডিসপ্লে: LTPO OLED Retina Display প্রসেসর: Apple S9 SiP ব্যাটারি লাইফ: ৩৬ ঘণ্টা (সাধারণ ব্যবহার) ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: ১০০ মিটার (ডাইভ-রেডি) সেন্সর: হার্ট রেট, ECG, SpO2, তাপমাত্রা, ডেপথ গেজ, ওয়াটার টেম্পারেচার সামঞ্জস্যতা: iPhone Apple Watch Ultra 2 বিশেষভাবে অ্যাথলেট, অভিযাত্রী এবং চরম পরিস্থিতিতে ব্যবহারকারীদের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এর মজবুত টাইটানিয়াম বডি, সুনির্দিষ্ট GPS ট্র্যাকিং এবং অবিশ্বাস্য ব্যাটারি লাইফ এটিকে সাধারণ smart watch থেকে আলাদা করে। যারা অ্যাডভেঞ্চার ভালোবাসেন, তাদের জন্য এটি সেরা পছন্দ। |
Apple Watch Series 10 |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳৪৬,৪৯০ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ নতুন পাতলা ডিজাইন, রক্তচাপ মনিটরিং ফিচার, উন্নত স্লিপ অ্যাপনিয়া ডিটেকশন, আরও শক্তিশালী S10 চিপ, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি। কেস সাইজ: 41mm, 45mm (সম্ভাব্য) ডিসপ্লে: LTPO OLED Retina Display প্রসেসর: Apple S10 SiP (সম্ভাব্য) ব্যাটারি লাইফ: ২০-২৪ ঘণ্টা (সম্ভাব্য) ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: ৫০ মিটার সেন্সর: হার্ট রেট, ECG, SpO2, তাপমাত্রা, রক্তচাপ (সম্ভাব্য) সামঞ্জস্যতা: iPhone Apple Watch Series 10 বিশেষভাবে দৈনন্দিন ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি, যারা স্মার্ট লাইফস্টাইল, স্বাস্থ্য ও ফিটনেসে উন্নত প্রযুক্তি চান। এর পাতলা ও হালকা ডিজাইন দীর্ঘক্ষণ ব্যবহারেও আরামদায়ক, এবং বড় ডিসপ্লে এটিকে আরও ব্যবহারবান্ধব করেছে। নতুন সেন্সরগুলো ঘুমের মান, হৃদস্পন্দন এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণে সাহায্য করে। আধুনিক ডিজাইন, উন্নত পারফরম্যান্স এবং Apple ইকোসিস্টেমের শক্তিশালী সমন্বয়ের কারণে এটি সাধারণ ব্যবহারকারী থেকে স্বাস্থ্য-সচেতন সবার জন্য আদর্শ পছন্দ। |
Apple হলো একটি বিশ্বখ্যাত মার্কিন প্রযুক্তি ব্র্যান্ড, যা উদ্ভাবন, প্রিমিয়াম মান এবং ব্যবহারবান্ধব ইকোসিস্টেমের জন্য সুপরিচিত। ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে Apple ধারাবাহিকভাবে এমন সব প্রযুক্তি উপহার দিয়েছে, যা মানুষের জীবনধারায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। iPhone, iPad, MacBook এবং Apple Watch-এর মতো ডিভাইসগুলো শুধু জনপ্রিয়ই নয়, বরং বিশ্ব প্রযুক্তি বাজারের মানদণ্ড তৈরি করেছে। গুণগত মান, নির্ভরযোগ্যতা এবং বিলাসবহুল অভিজ্ঞতা দেওয়ার কারণে Apple আজ বৈশ্বিক পর্যায়ে আস্থার প্রতীক।
২. Samsung
Samsung স্মার্ট ওয়াচের জগতে ক্লাসিক ডিজাইন এবং আধুনিক প্রযুক্তির এক চমৎকার সমন্বয় ঘটিয়েছে। Google-এর সাথে মিলিতভাবে Wear OS ব্যবহার করার ফলে এদের ঘড়িগুলো শক্তিশালী অ্যাপ সাপোর্ট এবং মসৃণ পারফরম্যান্স প্রদান করে। অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য, বিশেষ করে স্যামসাং স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য, Galaxy Watch সেরা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
Samsung Galaxy Watch - এর মডেল সমূহ
Galaxy Watch 8 Classic |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳৪৯,৯৯৯ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ ফিজিক্যাল রোটেটিং বেজেল, প্রিমিয়াম স্টেইনলেস স্টিল বা টাইটানিয়াম ডিজাইন, আরও উন্নত স্বাস্থ্য সেন্সর, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি, শক্তিশালী নতুন প্রসেসর, Wear OS সাপোর্ট। কেস সাইজ: 43mm, 47mm (সম্ভাব্য) ডিসপ্লে: Super AMOLED Display প্রসেসর: নতুন Exynos চিপ (সম্ভাব্য) ব্যাটারি লাইফ: ৪০-৫০ ঘণ্টা (সম্ভাব্য) ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: 5ATM + IP68 সেন্সর: BioActive (ECG, হার্ট রেট, BIA), তাপমাত্রা, 3D হল সেন্সর সামঞ্জস্যতা: Android Galaxy Watch 8 Classic তাদের জন্য, যারা একটি ক্লাসিক ঘড়ির ডিজাইন এবং আধুনিক স্মার্ট ফিচারের নিখুঁত সমন্বয় চান। এর সিগনেচার ঘূর্ণায়মান বেজেলটি ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে অনন্য করে তুলবে এবং এটি স্টাইল ও কার্যকারিতার এক দারুণ মিশ্রণ হবে বলে আশা করা যায়। |
Galaxy Watch 6 |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳১৭,৯৯৯ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ বড় ও উজ্জ্বল ডিসপ্লে, পাতলা বেজেল, অ্যাডভান্সড স্লিপ কোচিং, শরীরের গঠন বিশ্লেষণ, স্যাফায়ার ক্রিস্টাল গ্লাস, Wear OS সাপোর্ট। কেস সাইজ: 40mm, 44mm ডিসপ্লে: Super AMOLED Display প্রসেসর: Exynos W930 ব্যাটারি লাইফ: ৩০-৪০ ঘণ্টা ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: 5ATM + IP68 সেন্সর: BioActive (ECG, হার্ট রেট, BIA), তাপমাত্রা, অ্যাক্সেলেরোমিটার সামঞ্জস্যতা: Android Galaxy Watch 6 দৈনন্দিন ব্যবহার এবং ফিটনেস ট্র্যাকিংয়ের জন্য একটি দারুণ পছন্দ। এর বড় ও উজ্জ্বল ডিসপ্লেতে নোটিফিকেশন দেখা বা ডেটা ট্র্যাক করা খুব সহজ। যারা একটি আধুনিক, হালকা এবং শক্তিশালী অ্যান্ড্রয়েড স্মার্ট ওয়াচ চান, তাদের জন্য এটি আদর্শ। |
Samsung হলো একটি বিশ্বখ্যাত দক্ষিণ কোরিয়ান প্রযুক্তি ব্র্যান্ড, যা স্মার্টফোন, ইলেকট্রনিক্স এবং উদ্ভাবনী প্রযুক্তির জন্য সুপরিচিত। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত Samsung আজ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। উন্নতমানের প্রযুক্তি, বৈচিত্র্যময় দামের মডেল এবং শক্তিশালী ব্র্যান্ড ভ্যালুর কারণে Samsung শুধু আন্তর্জাতিক বাজারেই নয়, বাংলাদেশের মতো দেশেও গ্রাহকদের আস্থার শীর্ষে রয়েছে।
৩. Amazfit
Amazfit স্মার্ট ওয়াচগুলো "ভ্যালু ফর মানি" বা সাশ্রয়ী মূল্যে সেরা ফিচার দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছে। যারা অবিশ্বাস্য ব্যাটারি লাইফ, স্টাইলিশ ডিজাইন এবং প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্য ফিচার চান, কিন্তু প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের মতো অত বেশি খরচ করতে চান না, তাদের জন্য Amazfit সেরা বিকল্প।
Amazfit Smart Watch - এর মডেল সমূহ
Amazfit Balance 2 Smart Watch |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳২৯,০০০ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ Readiness স্কোর, শরীরের গঠন পরিমাপ, ১.৫ ইঞ্চি HD AMOLED ডিসপ্লে, ডুয়াল-ব্যান্ড GPS, ব্লুটুথ কলিং, ১৪ দিনের ব্যাটারি লাইফ। কেস সাইজ: 46mm ডিসপ্লে: 1.5" HD AMOLED প্রসেসর: প্রযোজ্য নয় ব্যাটারি লাইফ: ১৪ দিন (সাধারণ ব্যবহার) ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: 5ATM সেন্সর: BioTracker™ 5.0 PPG, BIA Bioelectric, তাপমাত্রা, জিপিএস সামঞ্জস্যতা: Android & iOS Amazfit Balance শুধু একটি ফিটনেস ট্র্যাকার নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ লাইফস্টাইল সঙ্গী। এর Readiness এবং Body Composition ফিচারগুলো আপনাকে আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে গভীর ধারণা দেয়। যারা একটি আধুনিক, ফিচার-সমৃদ্ধ এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারির smart watch চান, তাদের জন্য এটি সেরা। |
Amazfit GTS 2 Smart Watch Global Version |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳১৬,০০০ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ 3D কার্ভড AMOLED ডিসপ্লে, ব্লুটুথ কলিং, ৩ জিবি মিউজিক স্টোরেজ, PAI™ হেলথ অ্যাসেসমেন্ট, ৯০+ স্পোর্টস মোড, পাতলা ও হালকা ডিজাইন। কেস সাইজ: 42.8mm ডিসপ্লে: 1.65" AMOLED প্রসেসর: প্রযোজ্য নয় ব্যাটারি লাইফ: ৭ দিন (সাধারণ ব্যবহার) ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: 5ATM সেন্সর: BioTracker™ 2 PPG, SpO2, অ্যাক্সেলেরোমিটার, জাইরোস্কোপ সামঞ্জস্যতা: Android & iOS Amazfit GTS 2 সাশ্রয়ী মূল্যে একটি স্টাইলিশ এবং ফিচার-প্যাকড স্মার্ট ওয়াচ। যারা বাজেটের মধ্যে থেকে ব্লুটুথ কলিং, মিউজিক স্টোরেজ এবং একটি চমৎকার ডিসপ্লে চান, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ বিকল্প। |
Amazfit চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান Zepp Health-এর একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড। এই ব্র্যান্ডটি প্রমাণ করেছে যে, সেরা smart watch ফিচার পেতে সবসময় চড়া মূল্য দিতে হয় না। অসাধারণ ব্যাটারি লাইফ, স্টাইলিশ ডিজাইন এবং নির্ভুল স্বাস্থ্য ট্র্যাকিং ফিচার দিয়ে Amazfit বাজেট এবং মিড-রেঞ্জ সেগমেন্টে নিজেদের এক শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে গেছে।
৪. HUAWEI
HUAWEI তাদের প্রিমিয়াম বিল্ড কোয়ালিটি, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি এবং উদ্ভাবনী স্বাস্থ্য প্রযুক্তির জন্য স্মার্ট ওয়াচ বাজারে একটি বিশেষ জায়গা তৈরি করেছে। অ্যান্ড্রয়েড ও আইফোন - উভয় প্ল্যাটফর্মের সাথেই এদের ঘড়িগুলো চমৎকারভাবে কাজ করে, যা এটিকে সকল ধরণের ব্যবহারকারীর জন্য একটি আকর্ষণীয় বিকল্পে পরিণত করেছে।
HUAWEI Smart Watch - এর মডেল সমূহ
Huawei Watch D2 Aluminium Alloy Smart Watch |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳৪৯,৯৯৯ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ রক্তচাপ পরিমাপ, ECG বিশ্লেষণ, TruSeen™ 5.0+ হার্ট রেট মনিটরিং, ৭০+ ওয়ার্কআউট মোড, ৭ দিনের ব্যাটারি লাইফ, অ্যালুমিনিয়াম অ্যালয় কেস। কেস সাইজ: 51mm x 38mm ডিসপ্লে: 1.64" AMOLED প্রসেসর: প্রযোজ্য নয় ব্যাটারি লাইফ: ৭ দিন (সাধারণ ব্যবহার) ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: IP68 সেন্সর: প্রেসার সেন্সর, ECG, SpO2, হার্ট রেট, তাপমাত্রা সামঞ্জস্যতা: Android & iOS HUAWEI WATCH D শুধু একটি smart watch নয়, এটি একটি যুগান্তকারী স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ যন্ত্র। যারা নিয়মিত রক্তচাপ এবং ECG নিরীক্ষণ করতে চান, তাদের জন্য এটি একটি অসাধারণ ডিভাইস। স্বাস্থ্যকে যারা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেন, তাদের জন্য এই মডেলটি বিশেষভাবে তৈরি। |
HUAWEI Watch Fit 4 Pro Smart Watch |
![]() |
মূল্য: প্রায় ৳২৫,৯৯৯ |
মূল বৈশিষ্ট্যঃ টাইটানিয়াম বডি, 1.82″ AMOLED ডিসপ্লে (3000 নিট), ১০ দিনের ব্যাটারি, ফাস্ট ওয়্যারলেস চার্জিং, 5ATM ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স, ডুয়াল-ফ্রিকোয়েন্সি GPS, অফলাইন ম্যাপ, ECG ও SpO₂ সেন্সর, হার্ট রেট ও স্লিপ ট্র্যাকিং, Bluetooth কল সাপোর্ট, Android & iOS কম্প্যাটিবল। কেস সাইজ: 44.5×40.0×9.3 মিমি ডিসপ্লে: 1.82″ AMOLED (480×408px, 347 PPI) ওজন: প্রায় 30.4g (স্ট্র্যাপ ছাড়া) ব্যাটারি লাইফ: সর্বোচ্চ ১০ দিন (সাধারণ ব্যবহার প্রায় ৭ দিন) ওয়াটার রেজিস্ট্যান্স: 5ATM (৪০ মিটার পর্যন্ত) সেন্সর: ECG, হার্ট রেট, SpO₂, তাপমাত্রা, স্ট্রেস, স্লিপ ট্র্যাকিং সামঞ্জস্যতা: Android & iOS Watch Fit 4 Pro হলো অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ও স্বাস্থ্যসচেতন ব্যবহারকারীদের জন্য এক সম্পূর্ণ স্মার্ট সলিউশন। টাইটানিয়াম বডি, দীপ্তিময় AMOLED ডিসপ্লে, দীর্ঘ ব্যাটারি এবং উন্নত GPS ট্র্যাকিং এটিকে দৈনন্দিন জীবনকে আরও স্মার্ট করে তোলে। |
Huawei হলো একটি বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি ব্র্যান্ড যা মানুষের জীবনকে সহজ, দ্রুত এবং আরও সংযুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, কোম্পানিটি শুরু থেকেই নেটওয়ার্ক সমাধান, স্মার্টফোন, স্মার্ট ওয়াচ এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে।
সেরা Smart Watch মডেলের তুলনা
মডেল |
Apple Watch Ultra 2 with Titanium Milanese Loop 2024 |
Galaxy Watch 8 Classic |
Amazfit Balance 2 Smart Watch |
Huawei Watch D2 Aluminium Alloy Smart Watch |
ব্র্যান্ড |
Apple |
Samsung |
Amazfit |
Huawei |
দাম (টাকা) |
প্রায় ৳৯৭,৯৯০ |
প্রায় ৳৪৯,৯৯৯ |
প্রায় ৳২৯,০০০ |
প্রায় ৳৪৯,৯৯৯ |
মূল বৈশিষ্ট্য |
রাগড টাইটানিয়াম কেস, ৩০০০ নিটস ব্রাইটনেস, ডুয়াল-ফ্রিকোয়েন্সি GPS, ডাইভ কম্পিউটার, সাইরেন |
ফিজিক্যাল রোটেটিং বেজেল, স্টেইনলেস স্টিল/টাইটানিয়াম, Wear OS, উন্নত স্বাস্থ্য সেন্সর |
Readiness স্কোর, শরীরের গঠন পরিমাপ, ব্লুটুথ কলিং, ডুয়াল-ব্যান্ড GPS |
রক্তচাপ পরিমাপ, ECG, TruSeen™ 5.0+ হার্ট রেট, ৭০+ ওয়ার্কআউট মোড |
কেস সাইজ |
49mm |
43mm, 47mm |
46mm |
51×38mm |
ডিসপ্লে |
LTPO OLED Retina |
Super AMOLED |
1.5″ HD AMOLED |
1.64″ AMOLED |
ব্যাটারি লাইফ |
৩৬ ঘণ্টা (সাধারণ ব্যবহার) |
৪০–৫০ ঘণ্টা (সম্ভাব্য) |
১৪ দিন (সাধারণ ব্যবহার) |
৭ দিন (সাধারণ ব্যবহার) |
সেন্সর |
হার্ট রেট, ECG, SpO2, তাপমাত্রা, ডেপথ গেজ। |
BioActive (ECG, হার্ট রেট, BIA), তাপমাত্রা। |
BioTracker™ 5.0 PPG, BIA Bioelectric, তাপমাত্রা, জিপিএস। |
প্রেসার সেন্সর, ECG, SpO2, হার্ট রেট, তাপমাত্রা। |
উৎপত্তি |
যুক্তরাষ্ট্র |
দক্ষিণ কোরিয়া |
চীন |
চীন |
বাংলাদেশের জন্য সেরা Smart Watch সুপারিশ
প্রিমিয়াম ব্যবহারকারীদের জন্য Apple Watch Ultra 2 সেরা পছন্দ হতে পারে। এর রাগড টাইটানিয়াম ডিজাইন, ৩০০০ নিট ব্রাইটনেস, প্রিসিশন GPS এবং উন্নত স্বাস্থ্য সেন্সর এটিকে অ্যাথলেট, অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমী ও প্রফেশনাল ব্যবহারকারীদের জন্য আদর্শ করেছে।
অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য Samsung Galaxy Watch 8 Classic একটি দুর্দান্ত বিকল্প। এর ক্লাসিক ঘূর্ণায়মান বেজেল, উন্নত স্বাস্থ্য সেন্সর এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যবহারকারীদের স্টাইল ও প্রযুক্তির সেরা অভিজ্ঞতা দেয়।
যারা সাশ্রয়ী মূল্যে শক্তিশালী ফিচার চান, তাদের জন্য Amazfit Balance 2 সেরা অপশন। ১৪ দিনের ব্যাটারি লাইফ, Readiness স্কোর, ব্লুটুথ কলিং এবং GPS এটিকে ভ্যালু ফর মানি স্মার্ট ওয়াচে পরিণত করেছে।
স্বাস্থ্যসচেতনদের জন্য Huawei Watch D2 অসাধারণ একটি পছন্দ। এর রক্তচাপ পরিমাপ, ECG ও উন্নত TruSeen™ হার্ট রেট ট্র্যাকিং প্রযুক্তি বিশেষ করে যারা হেলথ মনিটরিং-এ গুরুত্ব দেন, তাদের জন্য উপযোগী।
সামগ্রিকভাবে, Amazfit Balance 2 বাংলাদেশের জন্য সেরা সুপারিশ কারণ এটি মাঝারি দামে ফ্ল্যাগশিপ-স্তরের ফিচার, দীর্ঘ ব্যাটারি ও স্টাইলিশ ডিজাইন প্রদান করে, যা বেশিরভাগ ব্যবহারকারীর বাজেট ও প্রয়োজনের সাথে মানানসই।
বাংলাদেশে স্মার্ট ওয়াচ এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ডসমূহের তুলনা
বাংলাদেশের Smart Watch বাজার দ্রুত বিকশিত হচ্ছে এবং এখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নিজস্ব পরিচিতি, মান ও মূল্যমান অনুযায়ী আলাদা গ্রাহকশ্রেণি রয়েছে। নিচে চারটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের তুলনামূলক বিশ্লেষণ দেওয়া হলো:
ব্র্যান্ড |
পরিচিতি |
গুণগত মান |
বাজারমূল্য |
Apple |
প্রিমিয়াম ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির প্রতীক, বিশেষ করে iPhone ব্যবহারকারীদের জন্য শীর্ষ পছন্দ |
সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন ও নির্ভরযোগ্য |
উচ্চ মূল্য |
Samsung |
স্টাইল ও প্রযুক্তির সমন্বয়, বিশেষ করে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য উপযোগী |
উন্নতমানের ও বৈচিত্র্যময় মডেল |
বাজেট থেকে উচ্চ মূল্য |
Amazfit |
ভ্যালু ফর মানি ও দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফের জন্য পরিচিত |
ভালো মান ও ফিচার সমৃদ্ধ |
বাজেট থেকে মাঝারি মূল্য |
Huawei |
স্বাস্থ্য ফিচার ও প্রিমিয়াম ডিজাইনে শক্ত অবস্থান |
উচ্চমানের প্রযুক্তি ও স্বাস্থ্যসচেতন ফিচার |
বাজেট থেকে উচ্চ মূল্য |
কাস্টমার রিভিউ ও ফিডব্যাক
"Apple Watch Ultra 2 কিনেছি মূলত আউটডোর অ্যাক্টিভিটির জন্য। এর GPS একদম সঠিক লোকেশন দেখায়, আর ৩০০০ নিট ডিসপ্লে রোদেও স্পষ্ট দেখা যায়। হার্ট রেট, SpO₂ আর ডেপথ গেজের মতো সেন্সরগুলো সত্যিই কাজে লাগে। তবে দামটা অনেক বেশি, তাই সবাই কিনতে পারবে না।" – আরিফ হোসেন, ঢাকা
Source: Gadget & Gear
"Samsung Galaxy Watch 8 Classic-এর ঘূর্ণায়মান বেজেল ব্যবহার করতে খুব মজা লাগে। ফিটনেস ট্র্যাকিং আর স্লিপ মনিটরিং অনেক উন্নত। ফোনে কল রিসিভ বা নোটিফিকেশন ম্যানেজ করাও সহজ। তবে ব্যাটারি একটানা ২ দিন টানে, এর থেকে বেশি হলে ভালো হতো।" – মেহজাবিন রহমান, চট্টগ্রাম
Source: Samsung Official Store
"Amazfit Balance 2 এক কথায় ভ্যালু ফর মানি। ১৪ দিনের ব্যাটারি লাইফ আমার ট্রাভেল লাইফস্টাইলের জন্য দারুণ উপযোগী। Readiness স্কোর আর শরীরের গঠন মাপার ফিচারগুলো হেলথ ট্র্যাকিংয়ে আলাদা সুবিধা দেয়। তবে অ্যাপলের মতো খুব বেশি স্মুথ অ্যাপ ইন্টিগ্রেশন নেই।" – রাশেদুল ইসলাম, রাজশাহী
Source: Daraz
"Huawei Watch D2 নিয়েছি মূলত স্বাস্থ্য মনিটরিংয়ের জন্য। রক্তচাপ ও ECG ফিচারগুলো বেশ নির্ভুল কাজ করে। অফিসে অনেক সময় বসে থাকি, তাই ওয়াচের রিমাইন্ডার ফিচারটা কাজে লাগে। তবে ব্যাটারি ৭ দিনের বেশি যায় না, আর দামও কিছুটা বেশি।" – নুসরাত জাহান, খুলনা
Source: Huawei Bangladesh
উপসংহার
স্মার্ট ওয়াচের জগৎ বৈচিত্র্যময় ও সম্ভাবনাময়। এই দীর্ঘ আলোচনার পর একটি বিষয় স্পষ্ট: ‘সেরা’ Smart Watch কোনো নির্দিষ্ট মডেল বা ব্র্যান্ডের নাম নয়। সেরা ডিভাইস সেটিই, যা আপনার জীবনযাত্রার সাথে মিশে গিয়ে তার অংশ হয়ে ওঠে এবং আপনার প্রয়োজনগুলোকে নিখুঁতভাবে পূরণ করে।
প্রযুক্তি এবং ফ্যাশনের এই অনবদ্য মিশ্রণ থেকে সঠিক সঙ্গীটি খুঁজে বের করার জন্য প্রয়োজন শুধু একটু গবেষণা এবং নিজের চাহিদাকে বোঝা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজেকে প্রশ্ন করুন - আপনার প্রয়োজন কোনটি? আপনার বাজেট কতটুকু? এবং কোন ফিচারগুলো আপনার জীবনকে সত্যিই সহজ করে তুলবে?
এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য ছিল আপনাকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সেই সিদ্ধান্তটি নিতে সাহায্য করা, যাতে আপনার বিনিয়োগ হয় সার্থক। আশা করি, এই আলোচনা আপনাকে এমন একটি সঙ্গী বেছে নিতে সাহায্য করবে, যা কেবল আপনার হাতঘড়ি নয়, বরং আপনার ডিজিটাল জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য ও নির্ভরযোগ্য অংশ হয়ে উঠবে।