মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বা বিপণন কৌশল কি? কিভাবে Marketing Strategy তৈরি করা হয়? এর গুরুত্ব

কোনো ব্যবসায়ই সঠিক মার্কেটিং স্টাটেজি ছাড়া সফলতার দিকে অগ্রসর হতে পারে না।  মূলত মার্কেটিং স্ট্রাটেজি পরিকল্পনা করা হয়ে থাকে অডিয়েন্সের দৃষ্টি সর্বোচ্চ ওই পণ্যের দিকে নিয়ে আসার লক্ষ্যে।  

মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বা Marketing Strategy কি?

যেকোনো পণ্য বা সেবাকে ক্রেতা বা গ্রাহক পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য যে ধরণের পরিকল্পনা তৈরি করা হয় এবং পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় সেটাকেই Marketing Strategy বা বিপণন কৌশল বলে।  

মনে করুন, আপনার কাছে কিছু ফল আছে, আপনি সেগুলো কেটে ভেতরটা দেখিয়ে বিক্রি করতে চান; এতে করে কাস্টমার সেই ফলটা কিনতেও পারে আবার নাও পারে, এটা তার প্রয়োজনের উপরও কিছুটা নির্ভর করে।  কিন্তু, আপনি এমন কিছু করলেন যেন ফল কেনার উদ্দেশ্যে না বের হয়েও আপনার কর্মকাণ্ডের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে কাস্টমার ফলটা কিনে নিলো সেটাই হবে ওই ব্যবসার মার্কেটিং স্ট্রাটেজি।  

একটি মার্কেটিং স্ট্রাটেজি সাধারণত বাজার গবেষণা, টার্গেট অডিয়েন্স, ব্র্যান্ডিং, মূল্য নির্ধারণ এবং প্রচারণার মাধ্যমে করা হয়ে থাকে।  অনেকেই ‘মার্কেটিং স্ট্রাটেজি’র সাথে গুলিয়ে ফেলেন ‘মার্কেটিং প্ল্যান’ কে।  মার্কেটিং প্ল্যান হলো একটি কোম্পানির কার্যক্ষম নথি।  এটি কোম্পানির সেবা বা পণ্যকে প্রচারণার কৌশলের মাধ্যমে এমন এক রূপরেখা দেয় যা পরবর্তীতে সঠিক অডিয়েন্স আকর্ষণ করতে সাহায্য করে।  বলা যেতে পারে, একটি মার্কেটিং প্ল্যান একটি কোম্পানির সম্পূর্ণ Marketing Strategy কে মূল্যায়ন করে হয়ে থাকে।  

আরো পড়ুন: মার্কেটিং প্ল্যান কি? বিভিন্ন ধরনের মার্কেটিং এর পদ্ধতিসমূহ

কিভাবে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি তৈরি করা যায়ঃ

পণ্য বা সেবার উপর নির্ভর করে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি বিভিন্ন ভাবে প্রস্তুত করা যায়।  এটি কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলে না, বরং বাজার এবং ক্রেতার উপর এই পদ্ধতি নির্ভর করে, পাশাপাশি অবস্থান অনুযায়ী এর যেকোনো রকম পরিবর্তন হতে পারে।  সেক্ষত্রে, মার্কেটিং এর উপর সঠিক ধারণা থাকা জরুরি, যেমন- কোন পণ্যের উপর মার্কেটিং করা হবে, কোন স্থান এই মার্কেটিং এর জন্য সঠিক হতে পারে বা কিভাবে এই মার্কেটিংকে পরিচালনা করা যায় ইত্যাদি।  এই পদ্ধতিকে ‘মার্কেটিং মিক্স’ (Marketing Mix) বা 4P’s of Marketing ও বলা হয়ে থাকে।  

4P’s of Marketing গুলো হলোঃ

  1. Product বা পণ্যঃ একটি কোম্পানির কোন প্রোডাক্ট বা পণ্যকে বিক্রি করতে হবে এটা নির্ধারণ করা।
  2. Price বা মূল্যঃ যে পণ্য সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বাজারভেদে তার নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণ করা।
  3. Place বা স্থানঃ পণ্যটিকে বিক্রয় করার জন্য সঠিক স্থান সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেয়া। এবং
  4. Promotion বা প্রচারণাঃ পণ্য বিক্রয় করার জন্য সঠিক প্রচারণা কোথায় হতে পারে এবং কিভাবে হতে পারে সে বিষয়ে ধারণা।  

এছাড়াও, মূল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রাথমিকভাবে কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রেখে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি তৈরি করা হয়।  তা হলো-

  1. লক্ষ্য তৈরি করা
  2. বাজার পর্যালোচনা বা বিশ্লেষণ 
  3. টার্গেট অডিয়েন্স 
  4. মূল্য নির্ধারণ কৌশল
  5. পণ্যের অবস্থান নির্ধারণ
  6. ব্র্যান্ডিং 
  7. ইজি এক্সেস বা সহজ ও দ্রুত পণ্য প্রাপ্তি 
  8. বাজেট নির্ধারণ 
  9. প্রচার পরিকল্পনা
  10. পারফর্ম্যান্স পর্যালোচনা

মার্কেটিং স্ট্রাটেজির এসকল ধাপগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো-

১. লক্ষ্য তৈরি করাঃ

প্রথমেই বলা হয়েছে Marketing Strategy তৈরির আগে পণ্য সম্পর্কে সঠিক ধারণা বা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে।  লক্ষ্য তৈরি করার ধাপটিতেই এ কাজটি সেরে ফেলতে হবে।  বাজারে অনেক ধরণের ব্যবসায় দেখে আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে এই পণ্যটি বিক্রি তুলনামূলক সহজ বা লাভজনক।  এ ধরণের ধারণা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া কোনো মার্কেটিং স্ট্রাটেজির অংশ হতে পারে না।  তাই, পণ্য সম্পর্কে সঠিক ও শক্তিশালী লক্ষ্য তৈরি করা হবে প্রথম ধাপ।   

২. বাজার বিশ্লেষণঃ

কয়েকটি বিষয়ের উপর এই ধাপটি গড়ে ওঠে।  যেমন- আপনি যা বিক্রি করতে চান তা বাজারে কতটা সহজলভ্য, যারা বিক্রি করছে তারা কি ধরণের পন্থা অবলম্বন করছে, পণ্যটির জন্য হুমকি হতে পারে কোন কোন কারণ এবং ঠিক কতটা প্রতিযোগীতার মুখোমুখী আপনাকে হতে হবে।  এই বিষয়গুলো ভালো করে বিশ্লেষণ করে নিলে তার উপর আপনার পণ্যটি বিক্রির প্রাথমিক একটি স্ট্রাটেজি আপনার মাথায় চলে আসবে।  তখন সেটা পরিচালনা করাটা হবে একমাত্র কাজ। 

৩. টার্গেট অডিয়েন্সঃ

টার্গেট অডিয়েন্স তারাই যারা আপনার পণ্য কেনার যোগ্য বা ইচ্ছুক।  টার্গেট অডিয়েন্স সঠিকভাবে নির্বাচন করতে পারলে পণ্য বিক্রির সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।  যেমন, রেসিং কার সব ধরণের অডিয়েন্সের জন্য তৈরি করা হয় না।  এই রেসিং কার কোম্পানিগুলো যদি চাইতো যে তাদের গাড়িগুলো সব দেশের সব ধরণের উপার্জনক্ষম মানুষ ব্যবহার করবে তবে সেটা ভুল স্ট্রাটেজি হতো।  তাদের অডিয়েন্সকে আলাদা করার মাধ্যমেই তাদের পণ্যকে বাজারে ছাড়তে কোন ধরণের পন্থা অবলম্বন করতে হবে সেটা সম্পর্কে অবগত থাকে।  

তার মানে টার্গেট অডিয়েন্স বিষয়টা আসলে ওই পণ্য বা সেবা গ্রাহকদের বিভিন্ন বিষয়ের উপর বর্তায়।  এক কথায় বললে, যার কাছে আমি পণ্য বিক্রি করবো পণ্যটি কেনার প্রতি তার মানসিকতা বুঝতে পারা মার্কেটিং স্ট্রাটেজির অনেক বড় সহায়ক।  

একইভাবে, পূর্বে যাদের কাছে পণ্য বিক্রয় করা হয়েছে তাদের উপর একটা ছোট খাটো জরিপ চালিয়েও এর অনেকটা কাছাকাছি সমাধানে পৌঁছানো যায়।  যখনই কাস্টমারের আচরণবিধি সম্পর্কে ধারণা আসতে শুরু করবে তখন স্ট্রাটেজি নির্ধারণে আপনি কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবেন। 

৪. মূল্য নির্ধারণ কৌশলঃ

যেকোনো পণ্য বা সেবাকে নির্দিষ্ট মূল্য দিয়ে দেয়া যেতেই পারে তবে সেটা যদি বাজারে উপস্থিত পণ্যের তুলনায় প্রতিযোগীতামূলক না হয় তবে সেটা স্ট্রাটেজিতে পড়বে না। 

মনে করুন, বাজারে লেবুর হালি ১০ টাকা।  বাজারের বাইরে এসে দেখলেন ঝুড়িতে করে একই লেবু ১০ টাকায় বিক্রি করলেও এক ডজন নিলে অনেক কম টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।  এক্ষেত্রে যার লেবু না কিনলেও চলতো সে কম টাকায় বেশি পাবার আশায় শেষমেশ বেশিটাই কিনে নেয়।  আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় দুইটি কিনলে একটি ফ্রি অফারে গ্রাহক সাধারণ পন্য কেনার চাইতে অফারের পণ্যটি নিতে বেশি আকর্ষণ বোধ করে। 

৫. পণ্যের অবস্থান নির্ধারণঃ

একটি পণ্যের গুণগত মান, বৈশিষ্ট, সুবিধা-অসুবিধার উপর ভিত্তি করে স্ট্রাটেজি নির্ধারণ করা যায়।  ভোক্তার চাহিদার উপর এটা অনেকাংশে নির্ভর করে।  অনেক সময় দেখা যায় বাজারে নকল সংকট তৈরি করে দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে।  এগুলো ব্যবসায়ের নীতিকে নষ্ট করে।  

তাই আপনার পণ্যকে যদি তার নিজস্ব অবস্থানে সর্বদা দণ্ডায়মান রাখতে পারেন তখন শুধু কাস্টমার উপকৃত হবার জন্যই আপনার স্ট্রাটেজি সফল হয় না, বরং আপনার সেবা ওই কাস্টমারের ইমোশনের অংশে পরিণত হয়।  এক্ষেত্রে অবস্থান জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

৬. ব্র্যান্ডিংঃ

যখন একটি প্রতিষ্ঠান ব্র্যান্ড হিসেবে সর্বোজনগ্রাহ্য হয় তখন অনেকাংশে বিক্রি প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যায়, তবে কোম্পানিকে ব্র্যান্ড হিসেবে দাঁড় করাতে প্রয়োজন হয় স্ট্রাটেজির।  এবং এই বিষয়টা ব্যবসার শুরু থেকেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে থাকে।  

বাজারে সবার টার্গেটই ব্র্যান্ড তৈরির পেছনে থাকলেও আদতে তা হয়ে ওঠে না।  এক্ষেত্রে ইউনিক, মানসম্পন্ন, নির্দিষ্ট কোনো ক্যাটাগরির দিকে ঝুঁকে এর লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়।  

তবে ব্র্যান্ড তৈরি হয়ে গেলেই যে সেটাতে আর কোনো স্ট্রাটেজি প্রয়োজন হয় না এমন টা নয়।  তখন প্রতিযোগীতার জায়গা ছোট হয়ে আসে।  সে সময় কাস্টমারের প্রতি লয়াল থাকা, পণ্য সরবরাহের নিয়ম মেনে চলা, লোগো বা কোম্পানির ট্যাগলাইন আকর্ষণ করে তুলতে তার প্রতি নজর দেয়া, এমনকি আপনার পণ্য কিনে কাস্টমার কতটা নিজের স্টেটাস নিয়ে সন্তুষ্ট তার দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা মূল দায়িত্বে পড়ে যায়।

আরো পড়ুন: ব্র্যান্ডিং কাকে বলে? ব্র্যান্ডিং কত প্রকার? সফল ব্র্যান্ডিং কিভাবে করবেন

 

৭. ইজি এক্সেক্স বা সহজ ও দ্রুত পণ্য প্রাপ্তিঃ

একটি পণ্য কেনার জন্য কাস্টমারকে কতটা মূল্য দিতে হচ্ছে সেটা বিবেচনায় রেখে মার্কেটিং স্ট্রাটেজি নির্ধারণ করা যায়। 

মনে করুন, আপনার বিক্রয়যোগ্য পণ্যটি যতই ভালো মানের হোক এবং দামে কম হোক সেটা পেতে কাস্টমারকে যদি বেশ ঝক্কি পোহাতে হয় তবে আপাত দৃষ্টিতে সে চিন্তা করে নেয়, একটু বেশি টাকা দিলেই তার সময় বাঁচবে বা হয়রানি থেকে সে মুক্তি পাবে।  তখন সে ভালো না হওয়ার পরও হয়তো সহজলভ্য জিনিসটার দিকে ঝুঁকে যায়।  

এক্ষেত্রে আমরা অনলাইনের কেনাবেচার উদাহরণ দিতে পারি।  যতই হাতে করে দেখে জিনিস কেনা রিস্ক ফ্রি হোক, ইদানিংকালে সময় বাঁচাতে বা ঘাম ঝড়িয়ে বাজারে যাওয়ার চেয়ে মানুষ অনলাইনে অর্ডার করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে বেশি।  এতে করে যে ঐ কাস্টমারের মনে এতটুকু সংশয় থাকে না পণ্য সম্পর্কে তা কিন্তু নয়।  তবু সে ইজি এক্সেসটাকে প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নেয়।  তাই এই বিষয়টা পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মার্কেটিং স্ট্রাটেজির একটি বড় জায়গা। 

৮. বাজেট নির্ধারণঃ

যে পণ্য নিয়ে অগ্রসর হওয়া তার বাজেট পরিকল্পনা একটি বিপণন কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।  কতটা বিনিয়োগের পর কতটা লভ্যাংশ আসবে সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।  কতদিনে মূল বিনিয়োগকৃত অর্থ উঠে আসে সেটাও ভেবে দেখার বিষয়।

একইভাবে, শুধু পণ্যের উৎপাদনের উপর নির্ভর করেই বাজেট তৈরি করে হয় না; সে পণ্যের প্রচারণা বা পরিবহণের মতো সকল দিক বিবেচনা করে মার্কেটীং স্ট্রাটেজিতে বাজেট নির্ধারণ করা আবশ্যক। 

৯. পণের প্রচার পরিকল্পনাঃ

কাস্টমার পণ্য সম্পর্কে অবগত না থাকলে সে ব্যবসার উদ্দেশ্য অঙ্কুরে বিনষ্ট হয়।  তাই প্রচারণা একটা ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।  আর এই প্রচারণাকেই কিভাবে ও কতটা আকর্ষনীয় করে তোলা যায় গ্রাহকের সামনে সেই অংশে কাজ করা মার্কেটিং স্ট্রাটেজির অপরিহার্য দিক।  

সেক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে তা ছড়ানো যেতে পারে।  সেটা হতে পারে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেমন সোশাল মিডিয়া ব্যবহার বা ইমেইল মার্কেটিং আবার অফলাইন মাধ্যমও হতে পারে যেমন বিজ্ঞাপন, লিফলেট বিলি বা বিভিন্ন ক্যাম্পেইন চালানো। 

১০. পারফর্ম্যান্স পর্যালোচনাঃ

মার্কেটিং স্ট্রাটেজির শেষ ধাপ হতে পারে পারফর্ম্যান্স পর্যালোচনা করে দেখা।  অর্থাৎ, যত রকম পরিকল্পনার মাধ্যমে আপনার ব্যবসার প্রসার ঘটাতে আপনি প্রস্তুত সেই পরিকল্পনাগুলো আসলেই ঠিক হলো কিনা তা যাচাই করে দেখা।  অথবা, যে কৌশল অবলম্বন করে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা যথেষ্ট কিনা। 

এমন হতে পারে, আপনি যা পরিকল্পনা করেছেন তা সঠিক হলেও সে অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না।  সেক্ষেত্রে স্ট্রাটেজি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।   

Marketing Strategy র গুরুত্বঃ

মার্কেটিং স্ট্রাটেজি যেকোনো ব্যবসায় পরিচালনার জন্য নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।  ব্যবসায় ছোট হোক বা বড় নির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা ছাড়া একে এগিয়ে নেয়ার অর্থ হচ্ছে চোখ বেঁধে রাস্তায় নেমে যাওয়া।  মার্কেটিং স্ট্রাটেজির অসংখ্য গুরুত্বের মধ্যে কয়েকটি হলো- 

  • মার্কেটিং স্ট্রাটেজি একটি ব্যবসার জন্য তাদের টার্গেট অডিয়েন্স সনাক্ত করতে সক্ষম হয়, যা ওই ব্যবসার জন্য মূখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।  কোনো পণ্য বিক্রির জন্য তার ক্রেতার চাহিদা ও রুচি বুঝতে পারা মানে ব্যবসাকে অনেকাংশে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।  
  • প্রতিযোগীতামূলক বাজারে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে অন্যদের থেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন হওয়াটা অতি জরুরি।  একটি ব্যবসার Marketing Strategy এই বিষয়গুলো গুছিয়ে নিতে সাহায্য করে।  
  • অডিয়েন্সের কাছে ব্র্যান্ড হিসেবে নিজের গ্রহণযোগ্যতাকে ফুটিয়ে তুলতে, কাস্টমারদের আকর্ষণ ধরে রাখতে এবং আস্থার জায়গা তৈরিতে এই মার্কেটিং স্ট্রাটেজির গুরুত্ব অপরিসীম।  
  • চাহিদার ওঠানামাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় একটা ব্যবসার গতিকে পরিবর্তন করা প্রয়োজন হয়।  সঠিক বিপণন কৌশলই পারে খাপ খাইয়ে নিয়ে স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা সৃষ্টি করতে। 
  • সবশেষে, উপার্জন বা অর্থ আয় করা হলো একটি ব্যবসার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।  একটি শক্তিশালী স্ট্রাটেজি ব্যবসার মূল উদ্দেশ্য তথা অর্থ উপার্জনের পথকে করে শিথিল।  সেবার পাশাপাশি কত কম সময়ে কতটা আয় বাড়ানো সম্ভব তা নিশ্চিত করে থাকে এই বিপণন কৌশল।

আরো দেখুন: মার্কেটিং প্ল্যান কেন তৈরি করবেন? ব্যবসার সফলতায় মার্কেটিং প্ল্যান বা বিপণন পরিকল্পনার গুরুত্ব

ব্যবসাকে পরিচালনা করা অনেক রকমের কঠিন কাজের মধ্যে একটি।  বাজারে পণ্য নিয়ে বসে যাওয়া লাখ লাখ ব্যবসায় দেখে মনে হতে পারে যা ইচ্ছা একটা বিক্রি করলেই তো আয় করা সম্ভব।  কিন্তু, পেছনের ঘটনা তা বলে না।  যেকোনো ব্যবসাকে টিকে থাকতে হলে বা সফল্ভাবে এগিয়ে যেতে গেলে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা।  এই পরিকল্পনা বা মার্কেটিং স্ট্রাটেজি ব্যবসার মতো অন্যতম কঠিন কাজকে করতে পারে সহজ ও আনন্দদায়ক।