ঘণ্টা, দিন, সপ্তাহ, এমনকি মাস হিসেবেও বর্তমানে চাইলেই অফিস ভাড়া নেওয়া যায় ঢাকার অনেক জায়গাতেই। অনেক ব্যবসায়ী, নতুন উদ্যোক্তা, পেশাজীবীদের কাজ করার জন্য একটি সুসজ্জিত অফিস স্পেসের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। কিন্তু একটি অফিস মানেইতো আসবাবপত্র, ইন্টারনেট সংযোগ, অ্যাডভান্স ইত্যাদির প্রয়োজন। যা নতুন উদ্য্যোক্তা বা ব্যবসায়ীদের পক্ষে বহন করা সম্ভব না। এ সমস্যা সমাধানে ঘণ্টা, দিন, সপ্তাহ, এমনকি মাস হিসেবেও অফিস স্পেস বা কো-ওয়ার্কিং স্পেস ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে এ শহরেই।
কো-ওয়ার্কিং স্পেস ধারনাটি বাংলাদেশে পরিচিত না হলেও বিশ্বের অনেক দেশে বেশ পরিচিত। এ ধারনাটি বাংলাদেশের জন্য খুবেই উপযোগী। ইতোমধ্যেই আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি কো-ওয়ার্কিং স্পেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সবচেয়ে খুশির বিষয় হল সরকারও কো-ওয়ার্কিং স্পেস নিয়ে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। সরকারি উদ্যোগে দেশের প্রতিটা জেলায় ফ্রিল্যান্সারদের জন্য “ফ্রি ল্যাব” তৈরির উদ্যোগ গ্রহন করেছেন সরকার, যা বিশেষ ধরনের কো-ওয়ার্কিং স্পেস হিসেবে বিবেচিত।
অফিস স্পেস এবং কো-ওয়ার্কিং স্পেস
অফিস স্পেস হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট কোম্পানির জন্য ডিজাইন করা একটি পৃথক জায়গা যেখানে কর্মীরা কাজ করে। আর কো-ওয়ার্কিং স্পেস হচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানি এবং ব্যক্তিদের দ্বারা ভাগ করা একটি খোলা জায়গা যেখানে তারা কাজ করে।
অফিস স্পেস দীর্ঘমেয়াদে এবং বেশি সংখ্যক কর্মীদের জন্য ভাড়া নেয়া হয়। আর কো-ওয়ার্কিং স্পেস স্বল্পমেয়াদে এবং তূলনামূলক কম কর্মীদের নিয়ে কাজ করা হয়।
এই ধরণের কোম্পানি কি কি সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে?
এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক কাজের জন্য সম্পূর্ণ রেডি এবং ডেকোরেটেড অফিস স্পেস সরবরাহ করে। এদের প্রধান সেবাগুলো হলো:
১. পূর্ণ সজ্জিত অফিস স্পেস: গ্রাহকদের চাহিদা এবং কর্মী অনুযায়ী স্পেস বরাদ্দ দেয়া হয়। এতে ডেস্ক, চেয়ার, কেবিনেট এবং অন্যান্য আসবাবপত্র অন্তর্ভুক্ত থাকে।
২. ইন্টারনেট ও টেলিকমিউনিকেশন সুবিধা: উচ্চ গতির ইন্টারনেট এবং টেলিফোন সুবিধা প্রদান করা হয়, যা অফিসের কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
৩. প্রিন্টিং এবং স্ক্যানার সুবিধা: প্রিন্টার, স্ক্যানার, ফটোকপি মেশিন ইত্যাদি ব্যবহারের সুযোগ।
৪. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও রক্ষণাবেক্ষণ: অফিস স্পেসের নিয়মিত পরিষ্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকে, যা কর্মক্ষেত্রকে সব সময় পরিষ্কার এবং সুষ্ঠু রাখে।
৫. নিরাপত্তা: ২৪/৭ নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সিসিটিভি মনিটরিং প্রদান করা হয়, যা অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
৬. কনফারেন্স রুম: মিটিং, প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য ইভেন্টের জন্য আলাদা রুমের সুবিধা।
৭. স্ন্যাকস: চা, কফি, নাশতা সুবিধা।
৮. রিসিপশন সুবিধা: রিসিপশন সুবিধা পাওয়া যায়। যার ফলে আলাদা লোক নিয়োগ দিতে হয়না।
এ ব্যবসার সাধারণ পরিসংখ্যান
ব্যবসাটি আমাদের দেশে নতুন হলেও আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি কো-ওয়ার্কিং স্পেস প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর চাহিদা এবং জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।
- ঢাকায় 200 টিরও বেশি কো-ওয়ার্কিং স্পেস রয়েছে, যা 2020 সালের তুলনায় 50% বৃদ্ধি পেয়েছে।
- 2023 সালে, বাংলাদেশের কো-ওয়ার্কিং স্পেস শিল্পের মূল্য 50 কোটি টাকারও বেশি ছিল, যা 2022 সালের তুলনায় 20% বৃদ্ধি পেয়েছে।
- 2024 সালের মধ্যে, ঢাকায় আরও 100 টি নতুন কো-ওয়ার্কিং স্পেস খোলার আশা করা হচ্ছে।
কোম্পানিগুলো কেন Bipony.com এ তালিকাভুক্ত করা হলঃ
Bipony.com বাংলাদেশে একটি বিজনেস ডিরেক্টরি এবং রিভিউ সেবা প্রদানকারী প্ল্যাটফর্ম। এটি এই সব সেন্টার সম্পর্কে গ্রাহকদের রিভিউ সংগ্রহ করার সুযোগ দেয়। গ্রাহকরা এখানে এ সম্পর্কে মতামত প্রদান করতে পারেন, যাতে অন্যান্য গ্রাহকদের সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হয়। যদি আপনার এই ধরণের প্রতিষ্ঠান থেকে স্পেস নেবার পরিকল্পনা থাকে, Bipony তে সার্চ করে সহজেই আপনার এলাকার নিকটবর্তী এই সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলো খুঁজে পেতে পারেন।
Bipony.com-এর মাধ্যমে Office Space and Co-working Space প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আরও বেশি তথ্য প্রদান করতে পারে, যা গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে সহায়ক হয়। একটি ভালো Yoga and Meditation Office Space and Co-working Space খুঁজে পেতে Bipony.com একটি চমৎকার মাধ্যম।
কো-ওয়ার্কিং স্পেস কোম্পানি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ
কো-ওয়ার্কিং স্পেস আপনার ব্যবসার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত হতে পারে, তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল করা গুরুত্বপূর্ণ:
১. বাজেট:
বিভিন্ন বাজেটের কো-ওয়ার্কিং স্পেস রয়েছে। আপনার বাজেটের জন্য উপযুক্ত একটি খুঁজুন।
২. অবস্থান:
প্রতিষ্ঠানটি কোথায় অবস্থিত তা বিবেচনা করুন। আপনার কর্মীদের জন্য যাতায়াত সুবিধাজনক কিনা তা নিশ্চিত করুন।
৩. সুযোগ-সুবিধা:
আপনার প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা পাবেন এমন একটি প্রতিষ্ঠান খুঁজুন। ইন্টারনেট, প্রিন্টিং, ফটোকপিয়িং, মিটিং রুম এবং রান্নাঘর সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
৪. পরিবেশ:
এমন একটি স্পেস খুঁজুন যা আপনার এবং আপনার কর্মীদের কাজের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ প্রদান করে।
৫. সংযোগ তৈরি: এই ধরণের কোম্পানিতে আরও অনেক কোম্পানি ভাড়া নেয়। তাদের সাথে সংযোগ বা টিম হিসাবে এক সাথে কাজ করার সুযোগ প্রদান।
৬. গ্রাহক পর্যালোচনা এবং রেটিং: প্রতিষ্ঠানের সুনাম এবং সেখানে স্পেস নেয়া লোকদের মতামত এবং পর্যালোচনা যাচাই করুন। অনলাইনে রিভিউ দেখে নিন।
কো-ওয়ার্কিং স্পেস যেন অন্যের অফিসে নিজের ঠিকানা পাওয়া। স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাওয়া মানুষদের কথা মাথায় রেখে বর্তমানে অফিস স্পেস রেন্ট বা কো-ওয়ার্কিং ধারণাটি গড়ে উঠেছে বিশ্বজুড়ে। ইতোমধ্যেই কাজের এই মাধ্যমটি বেশ ভালো একটি অবস্থানে চলে গেছে।